ঐক্য

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

ঐক্যের ধারণা, যা সাধারণত একতা নামেও পরিচিত, হল একটি অবিভাজ্য সত্তা হিসাবে বিদ্যমান অবস্থা বা বাস্তবতা।

উক্তি[সম্পাদনা]

অবশেষে, সমস্ত কিছুই একত্রিত হয়ে যায়, এবং একটি নদী তাদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীটি পৃথিবীর মহাপ্লাবন দ্বারা কাটা হয়েছিল এবং সময়ের গহ্বর থেকে পাথরের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। - নরম্যান ম্যাক্লিয়ান
  • বস্তুতঃ কেবল আধ্যাত্মিক ও কৃষ্টিমূলক ঐক্যই স্থায়ী ঐক্য। একটা জাতি টিকিয়া থাকে বেশীর ভাগ তাহার স্থিতিশীল মন ও আত্মার জন্য, তাহার স্থায়ী স্থূল শরীর ও বাহ্যিক সংগঠনের জন্য নহে।
  • য়ুরোপের ঐক্যসাধন এখনও কেবল আদর্শের স্তরে নিষ্ফল কল্পনামাত্র হইয়া রহিয়াছে, আজও তাহা কার্য্যতঃ সিদ্ধ করা সম্ভব হয় নাই, ইহা যদি পাশ্চাত্য সভ্যতার অযোগ্যতার অথবা য়ুরোপীয়গণের রাষ্ট্রনীতিক অক্ষমতার পরিচায়ক না হয়, তাহা হইলে ভারতের ইতিহাসে যে দেখিতে পাওয়া যায় ভারতবাসী ঐক্যের আদর্শটিকে অনেক বেশী স্পষ্টতার সহিত গ্রহণ করিয়াছে, উহাকে কার্য্যে পরিণত করিতে অবিরত চেষ্টা করিয়াছে, এবং পুনঃ পুনঃ সফলতার নিকটবর্ত্তী হইয়াছে, ইহাকে অন্য মানদণ্ড লইয়া বিচার কর ঠিক হয় না।
  • পৃথিবীর সকল ঐক্যের যাহা শাশ্বত ভিত্তি তাহাই সত্য ঐক্য। সে ঐক্য চিত্তের ঐক্য, আত্মার ঐক্য। ভারতে সেই চিত্তের ঐক্যকে পোলিটিকাল ঐক্যের চেয়ে বড়ো বলিয়া জানিতে হইবে; কারণ, এই ঐক্যে সমস্ত পৃথিবীকে ভারতবর্ষ আপন অঙ্গনে আহ্বান করিতে পারে।
  • যাহারা সময়ে অসময়ে ঐক্যের কথা বলে, এবং সর্ব অবস্থায়ই ও যে কোন মূল্যে ঐক্য বজায় রাখিবার জন্য আবেদন করে, তাহারা বিবর্ত্তনের এই মূল সূত্রই বিস্মৃত হয়। প্রকৃত ঐক্য ও মিথ্যা ঐক্য সক্রিয়তার ঐক্য ও নিষ্ক্রিয়তার ঐক্য—যে ঐক্যের ফল প্রগতি ও যে ঐক্যের ফল নিশ্চেষ্টতা—ইহাদের প্রভেদ বিচার করিতে হইবে। যাহারা চলার বেগ হারাইয়াছে, বৈপ্লবিক প্রেরণা যাহাদের নাই, সর্বাবস্থায় ও যে কোন মূল্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার সহজ বুলি আজিকার দিনে তাহাদেরই মুখে শোভা পায়। এইরূপ ঐক্যের মোহে পড়িয়া আমরা পথভ্রষ্ট হইব না।
  • একা মানুষ ভয়ংকর নিরর্থক; কেননা, একার মধ্যে ঐক্য নেই। বহুকে নিয়ে যে এক সেই হল সত্য এক। বহু থেকে বিচ্ছিন্ন যে সেই লক্ষ্মীছাড়া এক ঐক্য থেকে বিচ্ছিন্ন এক। ছবি এক লাইনে হয় না, সে হয় নানা লাইনের ঐক্যে। ছবির মধ্যে প্রত্যেক লাইনটি ছােটো বড়াে সমস্ত লাইনের আত্মীয়। এই আত্মীয়তার সামঞ্জস্যে ছবি হল সৃষ্টি।
  • ঐক্যের যে কি শক্তি, কি মাহাত্ম্য, তাহা ইংরেজ আমাদের চেয়ে ভাল করিয়াই জানে। ইংরেজ জানে, ঐক্যের অনুভূতির মধ্যে কেবল একটা শক্তিমাত্র নহে, পরন্তু এমন একটা আনন্দ আছে যে, সেই অনুভূতির আবেগে মানুষ সমস্ত দুঃখ ও ক্ষতি তুচ্ছ করিয়া অসাধ্যসাধনে প্রবৃত্ত হয়। ইংরেজ আমাদের চেয়ে ভাল করিয়াই জানে যে, ক্ষমতা-অনুভূতির স্ফূর্ত্তি মানুষকে কিরূপ একটা প্রেরণা দান করে।
  • স্বার্থগত একতাবুদ্ধি তাই সকল ঐক্যের মূল। ইংলণ্ডের প্রত্যেকের জাতি হিসাবে পরস্পরের সঙ্গে ঐক্য সেই স্বার্থবুদ্ধিপ্রসূত। সেইটেই তাদের ঐক্য-ইমারতের ভিত্তি।
  • আমাদের বুদ্ধিতে যে ধর্ম্মের ভাব আছে, তাহার মত যেমন ধার্ম্মিক পাওয়া যায় না; সেই প্রকার আমারদের সত্য ভাবের সহিত দৃশ্যমান কোন বস্তুরই ঐক্য দেখা যায় না। ঈশ্বরের লক্ষণ এবং সত্যের লক্ষণে সম্পর্ণ ঐক্য দেখিয়া ঈশ্বরকেই সত্য বলি। তিনি “সত্যজ্যোতীরসোহমৃতং।”
  • আমার মনে হয় না আমরা সকল জায়গায় হিন্দুশাস্ত্র ও পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের ঐক্য দেখাইতে পারি। যদি-বা ধরিয়া লওয়া যায় ইহা সম্ভব, তবুও আমার মনে হয় উন্নতিশীল ইউরোপীয় বিজ্ঞানের তথ্য-সকল ভারতীয় পণ্ডিতগণের গ্রহণযোগ্য করা দুঃসাধ্য।
  • অবশেষে, সমস্ত কিছুই একত্রিত হয়ে যায়, এবং একটি নদী তাদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীটি পৃথিবীর মহাপ্লাবন দ্বারা কাটা হয়েছিল এবং সময়ের গহ্বর থেকে পাথরের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]