কয়লা

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
অল্প ছাই রাখিয়া যাহা প্রায় নিঃশেষে পুড়িয়া যায়, তাহাই ভাল কয়লা। পাথর ও নানা আকরিক পদার্থ মিশানো কয়লা পুড়িবার সময়ে অতি অল্প তাপ উৎপন্ন করিয়া স্তূপীকৃত ভস্মে পরিণত হয়। নিকৃষ্ট কয়লার এক মণে যে কাজ পাওয়া যায়, উৎকৃষ্ট কয়লার আধ মণেই হয় ত সেই কাজ হয়।
জগদানন্দ রায়

কয়লা এক প্রকারের জীবাশ্ম জ্বালানী। কয়লা কালো বর্ণের হয়। এটি কার্বনের একটি রূপ।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • এখন নাহয় সভ্য মানুষে কয়লা, কেরোসিন, গ্যাস বা ইলেকট্রিক চুল্লির ব্যবহার শিখেছে। কিন্তু তার আগে তো জ্বালানি কাঠ না হলে মানুষের রান্নাবান্না কলকারখানা কিছুই চলত না, শীতের দেশে মানুষের বেঁচে থাকাই দায় হত।
    • সুকুমার রায়, কাঠের কথা, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৭২
  • পাথর কয়লা হইতে গ্যাস বাহির করিয়া ফেলিলে যাহা থাকে, তাহার নাম কোক্‌ কয়লা। কোক্‌ কয়লা হইতে পাথর কয়লার ন্যায় শিখা বাহির হয় না। তাহার কারণ এই যে, যে জিনিসটা জ্বলিয়া শিখা হয়, তাহার অধিকাংশ অগ্রেই বাহির করিয়া লওয়া হইয়াছে।
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, নানা প্রসঙ্গ : ১, বিবিধ প্রবন্ধ, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল-১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯৩৫
  • কয়লা ঘুঁটেতে যেন সাপে আর নেউলে
    ঝরিয়াকে করে দিক একদম দেউলে।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আজ হল রবিবার— খুব মোটা বহরের, ছড়া- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৯৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৯
  • উনুনে কয়লার আগুন জ্বালা হইয়াছে, এই আগুন এক ঘণ্টা কি দুই ঘণ্টা বেশ জ্বলিবে এবং তাহার পরে নিভিয়া যাইবে। উনুনের আগুন যদি ঠিক রাখিতে চাও, তাহা হইলে মাঝে মাঝে উনুনে নূতন করিয়া কয়লা দিতে হইবে। সূর্য্যের আগুন কত লক্ষ লক্ষ বৎসর ধরিয়া জ্বলিতেছে, কিন্তু ইহার আগুনের তাপ একটুও কমে নাই। ইহাতে কে কয়লা জোগায় এবং কি রকমেই বা ইহার কয়লার জোগাড় হয়, তোমরা ভাবিয়া ঠিক করিতে পার কি?
    • জগদানন্দ রায়, সূর্য্যের আলোক ও তাপ, গ্রহ-নক্ষত্র- জগদানন্দ রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, প্রকাশস্থান- এলাহাবাদ (প্রয়াগরাজ), প্রকাশসাল- ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩২২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫২-৫৩
  • এখন নাহয় সভ্য মানুষে কয়লা, কেরোসিন, গ্যাস বা ইলেকট্রিক চুল্লির ব্যবহার শিখেছে। কিন্তু তার আগে তো জ্বালানি কাঠ না হলে মানুষের রান্নাবান্না কলকারখানা কিছুই চলত না, শীতের দেশে মানুষের বেঁচে থাকাই দায় হত।
    • সুকুমার রায়, কাঠের কথা, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৭২
  • জানি! স্তব্ধ হয়ে গেছে তোমাদের অগ্রগতির স্রোত,
    তাই দীর্ঘশ্বাসের ধোঁয়ায় কালো করছ ভবিষ্যৎ
    আর অনুশোচনার আগুনে ছাই হচ্ছে উৎসাহের কয়লা।
    • সুকান্ত ভট্টাচার্য, ঐতিহাসিক, ছাড়পত্র কাব্যগ্রন্থ, সুকান্ত সমগ্র- সুকান্ত ভট্টাচার্য, প্রকাশক- সারস্বত লাইব্রেরী, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬৫
  • নিকটেই পাথুরে কয়লার স্তুপ! বহুদূর ধরিয়া পর্ব্বতাকারে কয়লা রক্ষিত হইয়াছে। যেন সমুদ্রের ধারে বরাবর একটা অবিচ্ছিন্ন কয়লার পাহাড়ের সারি চলিয়া গিয়াছে। সিঙ্গাপুর জাহাজে কয়লা লইবার একটি প্রধান আড্ডা। জাহাজের জন্য পাথুরে কয়লা বোঝাই হইবার স্থান।
    • ইন্দুমাধব মল্লিক, সিঙ্গাপুর, চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক, প্রকাশসাল- ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫২-৫৩
  • নূতন করিয়া কয়লা বা কেরোসিন তৈলেরও উৎপত্তি হইতেছে না, অথচ পূর্ব্বসঞ্চিত কয়লা ইত্যাদির ব্যয় ক্রমে বাড়িয়াই চলিয়াছে। এই আয়-ব্যয়ের হিসাব করিয়া আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণ বড়ই চিন্তাযুক্ত হইয়া পড়িয়াছেন। আশঙ্কা হইতেছে, বুঝি বা আর একশত বৎসরের মধ্যে পৃথিবীর কয়লা ও কেরোসিনের ভাণ্ডার নিঃশেষিত হইয়া যায়; কিন্তু আমরা ইহাতে কোন আশঙ্কারই কারণ দেখি না।
    • জগদানন্দ রায়, কেরোসিন্ তৈল, প্রাকৃতিকী- জগদানন্দ রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, এলাহাবাদ, প্রকাশসাল- ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩২১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৯৬
  • খনি থেকে কয়লা এনে সেই কয়লা দিয়ে লোকে আগুন জ্বালায়। কিন্তু তা না করে যদি একেবারে খনির মধ্যেই আগুন ধরিয়ে খনিকে খনি জ্বালিয়ে দেওয়া যায় তবে কিরকম হয়? বাস্তবিকই এমন সব কয়লার খনি আছে যার আশেপাশে বারোমাসই আগুন জলে। সে-সব খনির লোকেরা সব সময়ে ভয়ে ভয়ে থাকে-কখন সে আগুন খনির মধ্যে এসে পড়ে।
    • সুকুমার রায়, রাবণের চিতা, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৬০
  • হপ্তা পরে মিললো ছুটি—কয়লা কাটা বন্ধ,
    উঠছে হাসির হর্‌রা ভীষণ, বুক-ছাপা আনন্দ;
    খোশ-মেজাজে চলব মোরা, নাইকো কোনো চিন্তা,—
    (মাদল) তা ধিন্ ধিন্, তা ধিন্ ধিন্, ধিন্ ধিন্ তা, ধিন্ তা।
    • সুনির্মল বসু, ঘর-মুখো, সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা- সুনির্মল বসু, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৮
  • কলের চুল্লীতে যত ভাল কয়লা পোড়ানো যায়, কাজও তত ভাল হয়। অল্প ছাই রাখিয়া যাহা প্রায় নিঃশেষে পুড়িয়া যায়, তাহাই ভাল কয়লা। পাথর ও নানা আকরিক পদার্থ মিশানো কয়লা পুড়িবার সময়ে অতি অল্প তাপ উৎপন্ন করিয়া স্তূপীকৃত ভস্মে পরিণত হয়। নিকৃষ্ট কয়লার এক মণে যে কাজ পাওয়া যায়, উৎকৃষ্ট কয়লার আধ মণেই হয় ত সেই কাজ হয়।
    • জগদানন্দ রায়, প্রাণিদেহের উত্তাপ, প্রাকৃতিকী- জগদানন্দ রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, এলাহাবাদ, প্রকাশসাল- ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩২১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১২৪-১২৫
  • কাঠের কয়লা জ্বালাইলে তাহা হইতে শিখা বাহির হয় না, পাথর কয়লা জ্বালাইলে তাহা হইতে শিখা বাহির হয়। যে জিনিসটা জ্বলিয়া শিখা হয়, কাঠ জ্বলিবার সময়ই সেই জিনিসটা ফুরাইয়া গিয়াছে—তারপর কয়লা পাইয়াছ। কাজেই কাঠের কয়লায় সেই জিনিসটা নাই, আর তাহা জ্বলিবার সময় শিখাও দেখা যায় না। পাথর কয়লায় কিন্তু সেই জিনিসটা আছে, সুতরাং পাথর কয়লা জ্বলিবার সময় শিখা দেখা যায়।
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, নানা প্রসঙ্গ : ১, বিবিধ প্রবন্ধ, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল-১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯৩৫
  • অন্নাভাবে প্রথম উপার্জ্জন করিলাম। একজন কয়লার দালালের কেরাণী হইলাম। দেশে যখন কয়লার দুর্ভিক্ষ হইল তখন আমার মনিব চতুর্গুণ মূল্যে তাঁহার সঞ্চিত কয়লা ছাড়িতে আরম্ভ করিলেন। মনিব ক্রোরপতি হইলেন।
    • কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়, টমি, গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশক- গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সন্স, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩২১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৯
  • লন‍্ডনের বাতাসের মতো বাতাস কোথাও দেখলুম না। হাজার হাজার chimney অর্থাৎ ধূমপ্রণালী থেকে অবিশ্রান্ত পাথুরে কয়লার ধোঁওয়া ও কয়লার গুঁড়ো উড়ে উড়ে লন‍্ডনের বাতাসের হাড়ে হাড়ে প্রবেশ করেছে। দু দণ্ড লন‍্ডনের রাস্তায় বেড়িয়ে এসে হাত ধুলে সে হাত-ধোওয়া জলে বোধ করি কালীর কাজ করা যায়, কয়লার গুঁড়োয় বাতাস এমন ভরপুর। নিশ্বাসের সঙ্গে অবিশ্রান্ত কয়লার গুঁড়ো টেনে মাথায় এক-স্তর কয়লা জমে যায়; মাথার ঘিয়ে ও কয়লার গুঁড়োয় মাথাটাও বোধ হয় অত্যন্ত দাহ্য পদার্থ হয়ে দাঁড়ায়।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, একাদশ পত্র, য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩৯৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৮২-১৮৩

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]