জাহাজ

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
সমুদ্রে চলিতে চলিতে প্রতি বৎসরই কত জাহাজ ডুবিয়া মরে। কেহ মরে ঝড় তুফানে, কেহ মরে ঢেউয়ের ঝাপটায়, কেহ মরে পাহাড়ের গুঁতায়, আর কেহ মরে অন্য জাহাজের ধাক্কা লাগিয়া—যুদ্ধের কথা নাহয় ছাড়িয়াই দিলাম। এইরকম কত উপায়ে জাহাজ মরিতেছে তাহার ঠিকানাই নাই।
সুকুমার রায়

জাহাজ এক ধরনের বৃহদাকার জলযান যা নদী কিংবা সমুদ্রে চলাচলের উপযোগী করে যাত্রী কিংবা পণ্য পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হয়। আধুনিক সভ্যতার বিস্তারে জাহাজের অবদান অনস্বীকার্য। জাহাজ নানা ধরনের হয়ে থাকে। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ পরিবহন, অনুসন্ধান এবং যুদ্ধের জন্য জাহাজ ব্যবহার করে আসছে।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • সমুদ্রে চলিতে চলিতে প্রতি বৎসরই কত জাহাজ ডুবিয়া মরে। কেহ মরে ঝড় তুফানে, কেহ মরে ঢেউয়ের ঝাপটায়, কেহ মরে পাহাড়ের গুঁতায়, আর কেহ মরে অন্য জাহাজের ধাক্কা লাগিয়া—যুদ্ধের কথা নাহয় ছাড়িয়াই দিলাম। এইরকম কত উপায়ে জাহাজ মরিতেছে তাহার ঠিকানাই নাই।
    • সুকুমার রায়, জাহাজ ডুবি, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২০৬-২০৭
  • সমুদ্র এমত বিস্তৃত যে কতক দূর গেলে পর আর তীর দেখা যায় না; অথচ জাহাজের লোক পথ হারা হয় না। তাহার কারণ এই যে, জাহাজে কোম্পাস নামে একটা যন্ত্র থাকে; ঐ যন্ত্রে একটী সূচী আছে; জাহাজ যে মুখে যাউক না কেন, সেই সূচী সর্ব্বদাই উত্তর মুখে থাকে। উহা দেখিয়া নাবিকেরা দিক্ নির্ণয় করে।
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, জল—সমুদ্র—নদী, বোধোদয়- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দ (১২৫৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭২-৭৩
  • পরতে কি চাস মুক্তো গেঁথে হারে—
    জাহাজ বেয়ে যাব সাগর-পারে।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দুঃখহারী, শিশু- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ (১৪২৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৯
  • কী জানো মিয়া, কলের জাহাজ হলি, জানন যায় কত জোর চলতেছি, ঘণ্টায় কয় মাইল আলাম—সমুন্দুরের কোনখানে রইছি হিসাব করলি মেলে। নাও চালাইয়া জানুন কিবা?—দাড়িতে হাত বুলায় হােসেন, সকলকে অভয় দিয়া আবার বলে, ডরাইও না, দশ বাজলি কুয়াশা থাকবাে না। আইজ কাইল রোজ বিহানবেলা কুয়াশা হয়। এ্যারে কী কুয়াশা কয় মাঝি?
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, পদ্মানদীর মাঝি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সংস্করণ- ৩৫, প্রকাশক- বেঙ্গল পাবলিশার্স , প্রকাশস্থান- কলকাতা, পৃষ্ঠা ৭৯-৮০
  • ১৮৭৫ সালে পলিন (Pauline) নামক একখানি জাহাজ ভারত সাগর দিয়া যাইতেছিল। একদিন সেই জাহাজের লোকেরা দেখিল যে, তিনটা বড়-বড় তিমি জাহাজ হইতে খানিক দূরে খেলা করিতেছে। সকলে জাহাজের উপর দাঁড়াইয়া সেই খেলা দেখিতেছে। এমন সময় ভয়ঙ্কর এক সাপ জলের ভিতর হইতে মাথা তুলিয়া সকলের বড় তিমিটাকে জড়াইয়া ফেলিল।
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, তিমিঙ্গিল, বিবিধ প্রবন্ধ, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল-১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৬৩
  • সমুদ্রে ব্যবহারের জন্য অনেক জাহাজের সঙ্গে বড়ো-বড়ো নৌকা লওয়া হয়। হঠাৎ জাহাজের কোনো বিপদ হইলে লোকেরা জাহাজ ছাড়িয়া নৌকায় করিয়া সমুদ্রে নামে। এই সমস্ত নৌকাকে life boat অর্থাৎ 'প্রাণ-বাঁচানো নৌকা’ বলে। জাহাজ বেশিরকম জখম হইলে অনেক সময় নৌকা নামানো অসম্ভব হয়।
    • সুকুমার রায়, নৌকা, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৩৯
  • কলম্বাস দেখলেন, সে জাহাজ নিয়ে সমুদ্রের ভেতর আর অগ্রসর হওয়া নিরাপদ নয়। কাজেই ক্যানারী দ্বীপ থেকে পিন‍্টার বদলে আর একখানি জাহাজ জোগাড় করবার জন্যে তিনি চেষ্টা করতে লাগলেন; কিন্তু সেখানে থাকতে-থাকতেই তিনি খবর পেলেন যে, তাঁকে ধরবার জন্যে পর্ত্তুগালের রাজার আদেশে সৈন্য নিয়ে পর্ত্তুগালের জাহাজ ছুটে আসছে।
    • নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়, সমুদ্রজয়ী কলম্বাস - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক- দেব সাহিত্য কুটীর, প্রকাশসাল- ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩২
  • বিদেশী মাল জাহাজে করিয়া শহরের ঘাট পর্যন্ত আসিয়া পৌঁছিতে পারে, কিন্তু সেই জাহাজটাতে করিয়াই দেশের হাটে হাটে আমদানি রফ্‌তানি করাইবার দুরাশা মিথ্যা। যদি বিলিতি জাহাজটাকেই কায়মনে আঁকড়াইয়া ধরিতে চাই তবে ব্যাবসা শহরেই আটকা পড়িয়া থাকিবে।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শিক্ষার বাহন, শিক্ষা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৮৯
  • রেঙ্গুন হইতে চীন জাহাজ ছাড়িয়াছিল। জাহাজে সকল জাতীয় সকল শ্রেণীর যাত্রী। প্রতি বন্দরে কতক লোক উঠিল, কতক নামিল। একটি বাড়ীতে যেমন অনেক লোক থাকে, জাহাজেও সেইরূপ সকল যাত্রিই একত্রে কাল যাপন করিত; সর্ব্বদা দেখাসাক্ষাৎ ও মেশামিশি হইত।
    • ইন্দুমাধব মল্লিক, চীন জাহজে যাত্রিদল, চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক, প্রকাশসাল- ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৩
  • সমস্ত জাহাজটা যেন একটা প্রকাণ্ড বৈদ্যুতিক কারখানা। সেই বিদ্যুতে জাহাজ চলে এবং জাহাজের বাতি জ্বালা রান্না করা পর্যন্ত সমস্ত কাজ হয়। জাহাজের কাপ্তান কোথায়? ঐ যে তিনি জাহাজের টুপির নীচে বসিয়া দিকবীক্ষণ যন্ত্র দিয়া চারিদিক দেখিতেছেন।
    • সুকুমার রায়, ডুবুরী জাহাজ, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৫৬
  • এই তো কিছুকাল আগেও কাঠের জাহাজ না হলে মানুষে সমুদ্রে যেতে পারত না, কাঠের কড়ি বরগা থাম না হলে তার ঘর বাড়ি তৈরি হত না।
    • সুকুমার রায়, কাঠের কথা, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৭২
  • ক্রমে জাহাজ আসিয়া উপস্থিত হইল। জেটিতে জাহাজ ভিড়াইয়া নঙ্গর করা হইলে, আমরা সর্ব্বাগ্রে গিয়া জাহাজে উঠিলাম। জাহাজে যে সকল আরোহী ছিল, তাহারাও ক্রমে জাহাজ হইতে অবতরণ করিতে আরম্ভ করিল।
    • প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, ছেলে-ভুল, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ, ছেলে-ভুল - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, প্রকাশসাল- ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩০৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭
  • এই বাঙলার দশ লক্ষ নর-নারী প্রতি বছর শুধু ম্যালেরিয়া জ্বরে মরে। এক একটা যুদ্ধ জাহাজের দাম জানো? এর একটার খরচে কেবল দশ লক্ষ মায়ের চোখের জল চিরদিনের তরে মোছানো যায়।
    • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, পথের দাবী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক- এম. সি. সরকার এন্ড সন্স লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৪০-২৪১
  • অবশেষে একদিন সেই মুহূর্ত্ত এলো···কলম্বাসের নিজের জাহাজে। নাবিকেরা সকলে একত্র হয়ে কাজ ছেড়ে দিয়ে কলম্বাসকে ধরলো, যদি এই মুহূর্ত্তে তিনি জাহাজের মুখ ঘুরিয়ে স্পেনের দিকে না ফেরেন, তাহলে তারা নতুন ক্যাপ‍্টেন ঠিক করে, জাহাজ ফিরিয়ে নিয়ে যাবে...তারা আর কেউ অগ্রসর হবে না...
    • নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়, সমুদ্রজয়ী কলম্বাস - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক- দেব সাহিত্য কুটীর, প্রকাশসাল- ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৫

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]