পুতুল

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
ধনীর মেয়ের দামী পুতুল হরেকরকম খেলনা,
গরীব মেয়ে পায় না আদর, সবার কাছে ফ্যালনা।
সুকান্ত ভট্টাচার্য

পুতুল হলো মানুষ কিংবা অন্য কোনও প্রাণীর আদলে মাটি, কাঠ, কাপড় প্রভৃতি উপকরণ দিয়ে তৈরি ক্ষুদ্র আকৃতির একটি সংস্করণ। পুতুলকে মানুষ পশুপাখি প্রভৃতির প্রতিমূর্তিও বলা চলে। পুতুল খেলনা বিশেষ। বহু প্রাচীন কাল থেকেই পুতুল তৈরির কথা জানা যায়।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • যে বালকের মাটির পুতুল আছে সে আর-একটি বালকের কাঠের পুতুল দেখে প্রথমতঃ তার নিজের কাঠের পুতুল নেই বলে কাঁদতে বসে; এই রকমে তার নিজের পুতুলের ওপর যখন একবার বৈরাগ্য জন্মায় তখন সেই কাঠের পুতুলের কানে একটা মাকড়ি দেখে তার খুঁতখুঁৎ দ্বিগুণ বেড়ে ওঠে; তখন বিবেচনা করে না যে, সেই কাঠের পুতুলের কানে যেমন একটা মাকড়ি আছে তেমনি তার মাটির পুতুলের গলায় একটা হার আছে।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পঞ্চম পত্র, য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩৯৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬৭
  • মোমের পুতুল ঘুমিয়ে থাকুক দাঁত মেলে আর চুল খুলে,
    টিনের পুতুল চীনের পুতুল, কেউ কি এমন তুলতুলে?
    • সুকুমার রায়, আদুরে পুতুল, সুকুমার সমগ্র রচনাবলী- প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ১৬৬
  • একটা কাচের আলমারির মধ্যে নানারকমের ভাল ভাল পুতুল সাজান রহিয়াছে। প্রায় আধ ঘণ্টাকাল পুতুলগুলি অতি মনোযোগের সহিত দেখিলাম, যতবার দেখি, আশ যেন আর মেটে না। যে পুতুলের দিকে চাই, চক্ষু যেন আর নাড়িতে ইচ্ছা করে না। শুনিলাম, পুতুলগুলি কাঁচা মাটীর। কাঁচা মাটীর উপর তেমন সুন্দর রং আর কখনও দেখি নাই। নফরের কাজ দেখিয়া তাহার সুখ্যাতি না করিয়া থাকিতে পারিলাম না। বলিলাম, “এই সকল পুতুল কি তুমি নিজে গড়িয়াছ?”
    • প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, চূর্ণ প্রতিমা, তৃতীয় পরিচ্ছেদ, চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, প্রকাশক- দারোগার দপ্তর কার্য্যালয়, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৩ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ১৮
  • ধনীর মেয়ের দামী পুতুল হরেকরকম খেলনা,
    গরীব মেয়ে পায় না আদর, সবার কাছে ফ্যালনা।
    • সুকান্ত ভট্টাচার্য, পুরনো ধাঁধা, মিঠেকড়া কাব্যগ্রন্থ, সুকান্ত সমগ্র- সুকান্ত ভট্টাচার্য, প্রকাশক- সারস্বত লাইব্রেরী, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২০৬
  • ওয়াসিলিসা বসে বসে কাঁদতে লাগল। তখন তার কাঠের পুতুলের কথা মনে হ’ল। সে পুতুলের মুখে একটু খাবার দিয়ে বলতে লাগল, “কাঠের পুতুল! খাবার খাও, আবার তুমি জ্যান্ত হও, আমার সঙ্গে কথা কও।” কাঠের পুতুলের চোখ দুটো জ্বলে উঠল, ঠোঁট দুটো নড়ে উঠল, সে বলতে লাগল,—“কাঠের পুতুল সঙ্গে রয়, ওয়াসিলিসার কিসের ভয়? তুমি নিশ্চিন্তে ঘুমাও গিয়ে।”
    • সুকুমার রায়, ওয়াসিলিসা, সুকুমার সমগ্র রচনাবলী- প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭০
  • কোনোরকম খেলার পুতুল
    নেই কি, মা, ওঁর ঘরে?
    সত্যি কি ওঁর একটুও মন
    নেই পুতুলের ’পরে?
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পুতুল ভাঙা, শিশু ভোলানাথ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ (১৪০৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৯
  • মোমের পুতুল, লোমের পুতুল, আগলে ধরে হাতে,
    তবুও কেন হাবলা ছেলের মন ওঠে না তাতে?
    • সুকুমার রায়, খোকার ভাবনা, সুকুমার সমগ্র রচনাবলী- প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ১৬৮
  • পুতুলের জন্মদিনে কি চমৎকার খাবার! ময়দার মিঠাই, ময়দার পিঠে, ছোট্ট-ছোট্ট নারকেলের মোয়া, আর ছোট্ট-ছোট্ট গুড়ের টিকলি—এমনি সব আশ্চর্য আশ্চর্য জিনিস। রাত্রে শোবার আগে খুকি তার পুতুলদের ঝেড়ে মুছে, নাইয়ে, খাইয়ে ঘুম পাড়ালো আর বলে দিল, “এই দেখ, খাবার টাবার রইল, রাত্রে উঠে খাস।”
    • সুকুমার রায়, পুতুলের ভোজ, সুকুমার সমগ্র রচনাবলী- প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ১৮৩
  • একবার নাকি পুরীর রাজার শখ হয়, তিনি বলেন, ‘আমি দেখতে চাই পুতুল নিজে নিজে এসে জগন্নাথকে প্রণাম করবে।’ গিরিধারীর প্রপিতামহ সেই পুতুল তৈরি করেছিলেন। পুতুল নিয়ে গেল জগন্নাথের মন্দিরের কাছে, রাজাও এলেন। কারিগর সেখানে পুতুলকে ছেড়ে দিলে, পুতুল টকটক করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে জগন্নাথকে প্রণাম করে ফিরে এল, দেখে সকলে অবাক্‌, রাজা বহু টাকা পুরস্কার দিলেন কারিগরকে।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জোড়াসাঁকোর ধারে, জোড়াসাঁকোর ধারে- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯৪
  • যখন ছোটো ছিল, তখন মাটির পুতুল লইয়া এমনি ভাবে খেলা করিত যেন তাহার প্রাণ আছে, যখন বড়ো হইল তখন মানুষ-পুতুল লইয়া এমনি ভাবে পূজা করিতে লাগিল যেন তাহার দেবত্ব আছে। তখন যদি কেহ তাহার খেলার পুতুল ভাঙিয়া দিত তবে কি বালিকা কাঁদিত না। এখন যদি কেহ ইহার পূজার পুতুল ভাঙিয়া দেয় তবে কি রমণী ব্যথিত হয় না।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নরনারী, পঞ্চভূত - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৪
  • সকালে বিকালে ওঘরে কেহ থাকে না, শুধু বকুল আপন মনে পুতুল খেলা করে। পুতুল খেলিতে খেলিতে বাবার জন্য নিঃশব্দে সে কাঁদিত। মনের মানুষকে না দেখাইয়া অতটুকু মেয়ের গোপন কান্না স্বাভাবিক নয়, কি মন বকুলের কে জানে। কোন কাজে উপরে গিয়া শ্যামা দেখিত মুখ বাঁকাইয়া চোখের জলে ভাসিতে ভাসিতে বকুল তাহার পুতুল পরিবারটিকে খাওয়াইতে বসাইয়াছে।
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, জননী, ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ, জননী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশক- জেনারেল প্রিণ্টার্স য়্যাণ্ড পাব্লিশার্স লিঃ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯৫

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]