বিষয়বস্তুতে চলুন

শীত

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
শীতকালে তুষার-ঢাকা নেপালের গোসাইকুন্ড

শীত বাংলার ষড়ঋতুর পঞ্চম ঋতু। পৌষমাঘ এই দুই মাস মিলে শীতকাল। শীতকাল প্রধানত শুষ্ক এবং দিনের তুলনায় রাত হয় দীর্ঘ। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি শীতকাল হলেও বাস্তবে নভেম্বর থেকেই হালকা শীত অনুভূত হতে থাকে। শীতকালে রকমারি ফুল ফোটে। এই সময় ঘন কুয়াশা দেখা যায়। পাতা ও ঘাসে বিন্দু বিন্দু শিশির দেখা যায়।

উক্তি

[সম্পাদনা]
  • তুমি বসন্তের কোকিল, বেশ লোক। যখন ফুল ফুটে, দক্ষিণ বাতাস বহে, এ সংসার সুখের স্পর্শে শিহরিয়া উঠে, তখন তুমি আসিয়া রসিকতা আরম্ভ কর। আর যখন দারুণ শীতে জীবলোকে থরহরি কম্প লাগে, তখন কোথায় থাক, বাপু? যখন শ্রাবণের ধারায় আমার চালাঘরে নদী বহে, যখন বৃষ্টির চোটে কাক চিল ভিজিয়া গোময় হয়, তখন তোমার মাজা মাজা কালো কালো দুলালি ধরণের শরীরখানি কোথায় থাকে? তুমি বসন্তের কোকিল, শীত বর্ষার কেহ নও।
  • আবছায়া চারিদিক, ঝাপসা নিঝুম,
    পউষের ভোরবেলা—ভেঙে গেল ঘুম।
    উষার দুয়ারে এক তুষারের ঢেউ
    কখন পড়েছে ভেঙে, জানে না তা কেউ।
    ঝিমঝিমে হিম-হাওয়া বয় বার বার,
    দিকে দিকে বাজে যেন শীতের সেতার।
  • আইল শীত ঋতু হেমন্তের পরে,
    শীতল ধরণী এবে চাহে দিবাকরে।
    কুন্দ-শেফালিকা ফুলে
    নীহারবিন্দু উছলে;
    কুসুমকানন-মূলে
    শ্রীরাগ বিহার করে।
  • এখনো সুদূরে দেখি মেলিয়া নয়ন—
    ধোঁয়া আর কুয়াশার গাঢ় আবরণ।
    পউষের মিঠে রোদে বসেছি দাওয়ায়,
    নলেন গুড়ের পিঠে খাবি কে রে আয়॥
  • শীতল তখন কলসীটি নিয়ে আস্তে আস্তে পুকুর ঘাটে গেল। তখন ফাল্গুন মাস, পাড়া গাঁয়ে বেশ শীত। সেই শীতে পুকুর থেকে জল এনে, কাদা করে, সিঁদ বুজিয়ে, ভাল করে নিকিয়ে তবে শীতল ছুটি পায়।
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, ঠানদিদির বিক্রম, গল্পমালা, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল-১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৮৩-৩৮৪
  • জড়সড় দেহ মোর,—বড় শীত ভাই,
    রোদ-ছাওয়া দাওয়াটায় বসি এসে তাই;
    দুরে দেখি ফাঁকা মাঠে আলো ঝলমল,
    শালিখের ঝাঁক সেথা করে কোলাহল।
    • শীতের সকাল - সুনির্মল বসু, সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা- সুনির্মল বসু, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭১
  • হে সূর্য। শীতের সূর্য!
    হিমশীতল সুদীর্ঘ রাত তােমার প্রতীক্ষায়
    আমরা থাকি
    যেমন প্রতীক্ষা করে থাকে কৃষকদের চঞ্চল চোখ,
    ধানকাটার রােমাঞ্চকর দিনগুলির জন্যে।
    হে সূর্য, তুমি তাে জানাে,
    আমাদের গরম কাপড়ের কতাে অভাব!
    সারারাত খড়কুটো জ্বালিয়ে,
    এক টুকরাে কাপড়ে কান ঢেকে,
    কত কষ্টে আমরা শীত আটকাই।
  • শীতকালে মঙ্গলের দুই মেরুপ্রদেশে যে বরফ জমে, ঐ দাগটি তাহারি। তাহা হইলে বুঝা যাইতেছে, পৃথিবীর মেরুপ্রদেশ, শীতকালে যেমন বরফে ঢাকা পড়ে, মঙ্গলের মেরুপ্রদেশও ঠিক্ সেই রকমে বরফে আচ্ছন্ন হয়।
    • জগদানন্দ রায়, মঙ্গল, গ্রহ-নক্ষত্র- জগদানন্দ রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, প্রকাশস্থান- এলাহাবাদ (প্রয়াগরাজ), প্রকাশসাল- ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩২২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১১৯
  • এ সে রকম অবশ্য নয়—এ শুধু বরফের একটা প্রকাণ্ড স্তূপ। দুই পাহাড়ের মাঝখানে, শীতের সময় যে বরফ পড়েছিল—তারি খানিকট মাটি চাপা পড়ে গরমি কালেও আর কি গলতে পায়নি। একটা পাশ শুধু গলে গিয়ে মস্ত একটা বাড়ীর মত দেখতে হয়েছে—সে দিকটা যেন তার খোলা দরজা। এক জায়গায় নীচের থেকে বরফ গলে সুন্দর বরফের সেতু হয়ে আছে!
    • স্বর্ণকুমারী দেবী, কাহাকে?, দ্বাদশ পরিচ্ছেদ, কাহাকে?-স্বর্ণকুমারী দেবী, প্রকাশসাল- ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩০৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৬
  • যখন বরফ পড়ে পথঘাট সব পিছল হয় তখন সেই পিছল পথের উপর দিয়ে গাছের গুড়িগুলোকে টেনে নিয়ে নদীর ধারে কিম্বা রেলের লাইনে নিয়ে হাজির করে। যে বৎসর খুব তাড়াতাড়ি শীত পড়ে যায় কিম্বা খুব অতিরিক্ত বরফ পড়ে সে বৎসর তাদের ভারি কষ্ট। একে শীতের কষ্ট, তার উপর আবার নরম বরফের মধ্যে দিয়ে কাঠ টানবার কষ্ট।
    • সুকুমার রায়, কাঠের কথা, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৭৪

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]