সার্কাস

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
সার্কাস শুরু হল। টুকিটাকি দুটো-একটা খেলার পর শেষ হবে ঘোড়ার খেলা দেখিয়ে। দেশী মেয়ে ঘোড়ার খেলা দেখাবে।—অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সার্কাস হলো কলাকৌশলীদের একটি কোম্পানি যারা উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে স্থাপিত বড়ো বৃত্তাকার তাঁবুর ভিতর মানুষ ও জীবজন্তুদের নিয়ে ক্রীড়াকৌশল দেখিয়ে থাকেন। সার্কাসে বিভিন্ন ধরনের অভিনয়-পর্ব ও ক্রীড়াশৈলী অন্তর্ভুক্ত থাকে। তবে সার্কাস শব্দটি অনেক সময় অন্য অর্থেও ব্যবহার হয়। যেমন, একটি শহরে যেখানে একাধিক রাস্তা মিলিত হয়ে একটি বৃত্তাকার খোলা জায়গা তৈরি করে সেই স্থানটিকেও সার্কাস বলা হয়।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • সার্কাস শুরু হল। টুকিটাকি দুটো-একটা খেলার পর শেষ হবে ঘোড়ার খেলা দেখিয়ে। দেশী মেয়ে ঘোড়ার খেলা দেখাবে। দেখি কোত্থেকে একটা ঘোড়া হাড়গোড়-বের-করা ধরে আনা হয়েছে, মেয়েও একটি জোগাড় হয়েছে, সেই মেয়েকে সার্কাসের মেমদের মতো টাইট পরিয়ে সাজানো হয়েছে। দেশী মেয়ে ঘোড়ায় চেপে তো খানিক দৌড়ঝাঁপ করে খেলা শেষ করলে। এই হল দেশী সার্কাস।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঘরোয়া, ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ, ঘরোয়া-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক-বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশসাল- ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৪
  • বিনয় তাহাকে আজ গড়ের মাঠে সার্কাস দেখাইতে লইয়া গিয়াছিল। যদিও অনেক রাত্রি হইয়াছিল তবু তাহার এই প্রথম সার্কাস দেখার উৎসাহ সে সম্বরণ করিতে পারিতেছিল না। সার্কাসের বর্ণনা করিয়া সে কহিল, “বিনয়বাবুকে আজ আমার বিছানায় ধরে আনছিলুম। তিনি বাড়িতে ঢুকেছিলেন, তার পরে আবার চলে গেলেন। বললেন কাল আসবেন। দিদি, আমি তাঁকে বলেছি তোমাদের একদিন সার্কাস দেখাতে নিয়ে যেতে।”
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গোরা, ১৮ পরিচ্ছেদ, গোরা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৪৯
  • বাঙ্গালীর সার্কাসের ক্রমিক ইতিহাস হিসাবে প্রোফেসার বোসের সার্কাস প্রথম না হইলেও বাঙ্গালীর সার্কাস বলিতে প্রথমেই প্রোফেসার বোসের সার্কাস বুঝায়।
    • অবনীন্দ্রকৃষ্ণ বসু, বাঙ্গালীর সার্কাস- অবনীন্দ্রকৃষ্ণ বসু, প্রকাশক- পাবলিসিটি ষ্টুডিও, প্রকাশকাল- শ্রাবণ ১৩৪৩, পৃষ্ঠা ৩১
  • সার্‌কাসের খেলোয়াড় যখন তারের উপর দিয়া চলিতে চলিতে খেলা দেখায়, তখন সে কি করে তোমরা দেখ নাই কি? সে তারে উঠিয়াই নিজেকে স্থির রাখিবার জন্য ক্রমাগত হাত পা নাড়াচাড়া করিতে আরম্ভ করে।
    • জগদানন্দ রায়, দ্বিপক্ষ পতঙ্গের দল, পোকা-মাকড়- জগদানন্দ রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, এলাহাবাদ, প্রকাশসাল- ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৮৭
  • নবগোপাল মিত্তির ঐ পর্যন্ত করলেন, দেশী সার্কাস খুলে দেশী মেয়েকে দিয়ে ঘোড়ার খেলা দেখালেন। কোথায় হিন্দুমেলা আর কোথায় দেশী সার্কাস। সারা জীবন এই দেশী দেশী করেই গেলেন, নিজের যা-কিছু টাকাকড়ি সব ঐতেই খুইয়ে শেষে ভিক্ষেশিক্ষে করে সার্কাস দেখিয়ে গেলেন।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঘরোয়া, ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ, ঘরোয়া-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক-বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশসাল- ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৪
  • হাঙ্গেরীর বুদাপেস্ত শহরে একবার একটা সিংহ সার্কাসওয়ালার খাঁচা থেকে কেমন করে বেরিয়ে পড়েছিল। সিংহ বেরিয়ে পড়েছে দেখে সার্কাসের লোকেরা হৈ চৈ করে গোলমাল করে উঠতেই সিংহ বেচারা ভয়ে থতমত খেয়ে একেবারে সার্কাসের জমি পার হয়ে সড়ক পার হয়ে পাঁচিল টপকিয়ে এক খোলা ময়দানের মধ্যে গিয়ে হাজির।
    • সুকুমার রায়, খাঁচার বাইরে খাঁচার জন্তু, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৬২
  • এক বার একজন সহকারীর অসতর্কতায় দরজা খোলা পাইয়া এক সার্কাস হইতে একটা হাতি, তিনটা বাঘ, দুটো সিংহ আর দুটো মার্কিন ভল্লুক বাহির হইয়া পড়িয়াছিল। সার্কাসের লোকদের কিরূপ আতঙ্ক হইয়াছিল, বুঝিতেই পার।
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, জানোয়ারের শিক্ষা, বিবিধ প্রবন্ধ, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৫৩
  • ডাক্তার কহিলেন, শুনেচি ওর মা ছিল নাকি ইহুদী মেয়ে, কিন্তু বাপ ছিলেন বাঙালী ব্রাহ্মণ। প্রথমে সার্কাসের দলের সঙ্গে জাভায় যান, পরে সুরাভারা রেলওয়ে স্টেশনে চাকরি করতেন।
    • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, পথের দাবী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক= এম. সি. সরকার এন্ড সন্স লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২০৪
  • একদিন নবগোপাল মিত্তির এসে উপস্থিত; বললেন, একটা কাণ্ড করেছি, দেশী সার্কাস পার্টি খুলেছি। ও ব্যাটারাই সার্কাস দেখাতে পারে, আর আমরা পারি নে, তোমাদের যেতে হবে।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঘরোয়া, ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ, ঘরোয়া-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক-বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশসাল- ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৩
  • রঙিন মুখোশ পরে রণ-পা বাগিয়ে
    তেড়ে আসছে সার্কাসের ক্লাউনেরা
    অনেক হয়েছে ট্রাপিজ মহড়া এবার নাহয়
    অন্য খেলা হোক
    • তপোধীর ভট্টাচার্য, কবিতাসংগ্রহ- তপোধীর ভট্টাচার্য, তৃতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশক- এবং মুশায়েরা, কলকাতা, প্রকাশসাল-২০১৫ খ্রিস্টাব্দ (১৪২২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬৪

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]