বঙ্গভঙ্গ (১৯৪৭)
অবয়ব
(বাংলা ভাগ (১৯৪৭) থেকে পুনর্নির্দেশিত)
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতকে ধর্মের ভিত্তিতে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। ফলে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি দেশের জন্ম হয়। এই বিভাজনের অংশ হিসেবে বাংলাকেও ভাগ করা হয়।ফলে হিন্দু অধ্যুষিত পশ্চিমবঙ্গ ভারতের সাথে যুক্ত হয় এবং মুসলিম অধ্যুষিত পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হয়।
উক্তি
[সম্পাদনা]- তেলের শিশি ভাঙল বলে
খুকুর পরে রাগ করো
তোমরা যে সব বুড়ো খোকা
বাংলা ভেঙে ভাগ করো!
তার বেলা?- অন্নদাশঙ্কর রায়।'খুকু ও খোকা' ছড়া। "ছড়া-সমগ্র" - অন্নদাশঙ্কর রায়। প্রকাশক- বাণীশিল্প, প্রকাশকাল ১৯৮৫, পৃষ্ঠা- ৩৬
- প্ররোচনায় বিভ্রান্ত হয়ে কেউ কেউ হয়তো ভেবেছেন, বিভক্ত বাংলার হিন্দু-বাঙালি হয়তো স্বাধীনভাবে আত্মপ্রকাশের সুযোগ পাবে, কিন্তু এ স্বপ্ন মরীচিকা মাত্র। আইন পরিষদের হিন্দু সদস্যদের ও বাংলা কংগ্রেসের স্বাধীন মত ব্যক্ত করার অধিকার দিলে তাদের অধিকাংশ বাংলা বিভাগের রোয়েদাদ প্রত্যাখ্যান করতেন। বাঙালি হিন্দুর বুকের উপর হুকুম নামার পিস্তল ধরে মৃত্যু পরোয়ানা সই করে নেয়া হচ্ছে অথচ হিন্দু বাংলা টু শব্দটি করতে পারছেনা। সুরেন্দ্রনাথ, দেশবন্ধু, দেশপ্রিয় ও নেতাজীর জাতির কি সত্যিই এমনি অধঃপতন হয়েছে।
- ১৯৪৭ সালে জাগরণ পত্রিকায় শরৎচন্দ্র বসু এটি লিখেছিলেন।"বাংলা যেভাবে ভাগ হলো" - মুহাম্মদ আসাদ। কৃষ্ণচূড়া প্রকাশনী, প্রকাশকাল-২০০৯, পৃষ্ঠা-৫
- এটা ১৯৪৭ সালের কথা। তখন আমি মিস্টার সোহরাওয়ার্দীর দলে ছিলাম। তিনি এবং শরৎচন্দ্র বসু একটি অখন্ড বাংলা চান। আমিও চাই সকল বাঙালির জন্য একটি দেশ। বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কী না করতে পারত! তারা বিশ্ব জয় করতে পারত।
- অন্নদাশঙ্কর রায়ের এক প্রশ্নের উত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটি বলেছিলেন।[১]
- যারা আমাদের এই সোনার দেশকে দুভাগ করেছে - তারা দেশের দুশমন।
- দেশ তো রাজনৈতিকভাবে ভাগ হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের সংস্কৃতি অখণ্ড ও অবিভাজ্য। গঙ্গার পানির অধিকার যেমন দুই বাংলার মানুষ চায়, তেমনি বাংলা সংস্কৃতির অধিকারও দুই বাংলার মানুষের। এই ঐতিহ্য-চেতনা যদি সারা পৃথিবীর বাংলাভাষী মানুষের মধ্যে জাগানো যায় ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত হতে পারে, হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির ভিত্তিতে একটি কালচারাল নেশন বা সাংস্কৃতিক জাতি গড়ে তুলতে পারে, তাহলে তারা হয়তো বাঙালির মুক্তি আনতে পারে। এই অসাম্প্রদায়িক বাঙালি সাংস্কৃতিক জাতি পরবর্তীকালে অবিভক্ত স্বাধীন বাংলাদেশের সীমানা চিহ্নিত করবে।
- আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর সাথে সত্যজিৎ রায় বলেছিলেন।[৩]
- ভারত ভাগ না হলেও বাংলাকে অবশ্যই ভাগ করতে হবে।
- শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি।১৯৪৭ সালের মে মাসে, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি লর্ড মাউন্টব্যাটেনকে উদ্দেশ্য করে একটি চিঠিতে এটি লিখেন।[৪]
- নেতারা যদি নেতৃত্ব দিতে ভুল করে, জনগণকে তার খেসারত দিতে হয়। যে কলকাতা পূর্ব বাংলার টাকায় গড়ে উঠেছিল, সেই কলকাতা আমরা স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিলাম। কেন্দ্রীয় লীগের কিছু কিছু লোক কলকাতা ভারতে চলে যাক এটা চেয়েছিল বলে আমার মনে হয়।
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা: ৭৯
- এদিকে সিলেটে গণভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ করিমগঞ্জ মহকুমা ভারতবর্ষকে দিয়েছিল। আমরা আশা করেছিলাম, আসামের কাছাড় জেলা ও সিলেট জেলা পাকিস্তানের ভাগে না দিয়ে পারবে না। আমার বেশি দুঃখ হয়েছিল করিমগঞ্জ নিয়ে। কারণ, করিমগঞ্জে আমি কাজ করেছিলাম গণভোটের সময়।
- শেখ মুজিবুর রহমান। অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা: ৭৮-৭৯
- কলকাতা ছাড়া বাংলার কি মূল্য আছে? তারা অর্থাৎ বাঙালিরা স্বাধীন ও অখন্ড থাকলেই ভালো।
- মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। "বাংলা যেভাবে ভাগ হলো" - মুহাম্মদ আসাদ। কৃষ্ণচূড়া প্রকাশনী, প্রকাশকাল-২০০৯, পৃষ্ঠা-৫
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় বঙ্গভঙ্গ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।