সুভাষচন্দ্র বসু
অবয়ব
সুভাষচন্দ্র বসু (২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ - ১৮ আগস্ট ১৯৪৫) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক উজ্জ্বল ও চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা।
উক্তি
[সম্পাদনা]- আমি আমাদের সংগ্রামের ফলাফল সম্পর্কে খুব আশাবাদী, ভারতের অভ্যন্তরে একটি বিশাল আন্দোলন চলছে এবং আমাদের লক্ষ লক্ষ দেশবাসী স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সর্বাধিক দুর্ভোগ ও আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুত। [....] আমাদের আজ একটাই আকাঙ্ক্ষা থাকা উচিত-মৃত্যুর আকাঙ্খা, যাতে ভারত বাঁচতে পারে, যাতে শহীদের রক্তে স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত হয়।
আজ আমি তোমাদের কাছে সর্বোপরি একটি জিনিস চাই; আমি তোমাদের কাছে রক্তের দাবি করছি একমাত্র রক্তই রক্তের প্রতিশোধ নিতে পারে। রক্তই স্বাধীনতার মূল্য দিতে পারে। আমাকে রক্ত দাও এবং আমি তোমাদের স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি!- ১৯৪৪ সালের ৪ জুলাই, বার্মায় ভারতীয়দের এক জনসভায় নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু - জাতীয় কংগ্রেস ওয়েবসাইট।
- ভারত ডাকছে (ইন্ডিয়া ইজ কলিং)। রক্ত রক্তকে ডাকছে। উঠো, আমাদের হারানোর সময় নেই। তোমরা অস্ত্র নাও! আমরা শত্রুর পদমর্যাদা ভেদ করে আমাদের পথ খোদাই করব, অথবা ঈশ্বর চাইলে আমরা শহীদ হয়ে মরব। এবং আমাদের শেষ ঘুমের মধ্যে আমরা সেই রাস্তাটিকে চুম্বন করব যা আমাদের সেনাবাহিনীকে দিল্লিতে নিয়ে যাবে। দিল্লির রাস্তা স্বাধীনতার রাস্তা। দিল্লি চলো। (মার্চ টু দিল্লি)।
- ইন্ডিয়া কলিং-এ (১৯৪৬) নিজের এবং আর. আই. পলের উদ্ধৃতি, পৃষ্ঠা ৫
- যে স্বপ্নগুলি আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে এবং আমার জীবনের একটি উদ্দেশ্য দিয়েছে তা হল একটি মহান এবং অবিভক্ত বাংলা … এমন একটি বাংলা যেটি সমস্ত সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীর ঊর্ধ্বে এবং মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধ সকলের আবাসস্থল।
- ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আইএনএ) গঠনের প্রায় এক দশক আগে, নেতাজি উনার সহবাঙালিদের উদ্দেশ্যে এই আবেগপূর্ণ বার্তাটি লিখেছিলেন। [১]
- ...দেশবন্ধুকে লইয়া বা তাঁহার মৃত্যুর পর হাতজোড় করিয়া নিখিল-ভারত কংগ্রেস-কমিটির মুখ চাহিয়া বাঙ্গলার সমস্যার মীমাংসার জন্য বসিয়া থাকিলে চলিবে না। হিন্দু-মুসলমান-সমস্যা নিখিলভারতের দিক হইতে মীমাংসিত হইলেও বাঙ্গলার সমস্যা বাঙ্গালীকেই সমাধান করিতে হইবে।
- হিন্দু-মুসলমান প্যাক্ট ও তাহার ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আলোচনা প্রসঙ্গে লিখিত সুভাষ বসুর ইংরেজী চিঠির অংশবিশেষের বঙ্গানুবাদ।[২]
- সাংস্কৃতিক অন্তরঙ্গতার পথে বড় বাধা ধর্মোন্মত্ততা এবং ধর্মোন্মত্ততার প্রতিকার হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষ এবং বৈজ্ঞানিক শিক্ষার চেয়ে উৎকৃষ্টতর আর কিছু নেই।
- ৩ মে ১৯২৮, ষষ্ঠ মহারাষ্ট্র প্রাদেশিক সম্মেলনে সভাপতির ভাষণে সুভাষ চন্দ্র বসু।
- মানুষ, টাকাকড়ি ,বাহ্যিক আড়ম্বর দিয়ে কখনোও স্বাধীনতা জয় করা যায় না। তার জন্য দরকার আত্মশক্তি, যা সাহসী পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে।
- শুধুমাত্র চিন্তার জন্য কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু, সেই চিন্তা আজীবন অমৃত থাকে এবং তা একজন থেকে আরেকজনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
- যদি জীবনে সংগ্রাম, ঝুঁকি না থাকে, তাহলে বেঁচে থাকা অনেকটা ফিকে হয়ে যায়।
- একজন ব্যক্তি একটি ধারণার জন্য মারা যেতে পারে, কিন্তু সেই ধারণাটি, তার মৃত্যুর পরে, হাজারো জীবনে অবতীর্ণ হবে।
- আমরা যখন দাঁড়াবো, তখন আজাদ হিন্দ ফৌজ গ্রানাইটের দেয়ালের মতো হতে হবে; যখন আমরা মিছিল করবো, তখন আজাদ হিন্দ ফৌজকে স্টিমরোলারের মতো হতে হবে।
- ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার হওয়ার বিষয়ে ১৯৪৩ সালের ২৬শে আগস্ট তার ভাষণে, যেমনটি দুর্লব সিং দ্বারা রচিত ফ্রমেশন ফর্মেশন অ্যান্ড গ্রোথ অব দ্য ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আজাদ হিন্দ ফৌজ)-এ (১৯৪৬) উদ্ধৃত হয়েছে, পৃষ্ঠা ২৫
- তাঁর দ্বারা ১৯৩৯ সালের গোড়ার দিকে তৈরি স্লোগানটি ছিল - "ব্রিটেনের অসুবিধাই ভারতের সুযোগ"।
- এস.আর.গোয়েল, জেনেসিস অ্যান্ড গ্রোথ অব নেহেরুইজম , ১ম খণ্ড
- [জাতীয়-সমাজতন্ত্র] শুধুমাত্র সংকীর্ণ ও স্বার্থপরই নয় বরং [এর জাতিগত দর্শনের জন্য] অহংকারী [একটি] অত্যন্ত দুর্বল বৈজ্ঞানিক ভিত্তি।
- লিওনার্ড গর্ডনের উদ্ধৃতি, বেঙ্গল দ্য ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট, পৃষ্ঠা ২৬০ ও এলস্টে, কে (২০১০)। দ্য স্যাফরন স্বস্তিকা: দ নোশন অব "হিন্দু ফ্যাসিজম"। পৃ ৯৫৯
- আমাদের অসীম শক্তি আছে—নাই আমাদের আত্ম-বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা। নিজের উপর, নিজের জাতির উপর বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা ফিরাইয়া আনিতে হইবে। দেশবাসীকে অন্তরের সঙ্গে ভালবাসিতে হইবে। মানুষ অন্তরের সহিত যাহা আকাঙ্ক্ষা করে তাহা একদিন পাইবেই পাইবে।
- নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১১১
- স্বাধীনতার পুণ্য আলোক পেয়ে চীন, জাপান, তুরস্ক, মিসর পর্য্যন্ত আজ জগৎ-সভায় উন্নতশিরে এসে দাঁড়িয়েছে। তোমরা কি এখনও মোহাবেশে ঘুমিয়ে থাকবে? তোমরা ওঠো, জাগো, আর বিলম্ব করলে চলবে না।
- তরুণের স্বপ্ন - সুভাষচন্দ্র বসু, কলকাতা, শ্রীগোপাললাল সান্যাল কর্ত্তৃক সঙ্কলিত ও প্রকাশিত, প্রকাশসাল- ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯-১০
- বাঙ্গালী জাতীয় জীবনের অন্য সব ক্ষেত্রে অগ্রণী না হলেও আমার স্থির বিশ্বাস যে, স্বরাজ-সংগ্রামে বাঙ্গলার স্থান সর্ব্বাগ্রে। আমার মনের মধ্যে কোনও সন্দেহ নেই যে, ভারতবর্ষে স্বরাজ প্রতিষ্ঠিত হবেই এবং স্বরাজ প্রতিষ্ঠার গুরুভার প্রধানতঃ বাঙ্গালীকে বহন করতে হবে।
- তরুণের স্বপ্ন - সুভাষচন্দ্র বসু, তৃতীয় সংস্করণ, শ্রীগোপাললাল সান্যাল কর্ত্তৃক সঙ্কলিত ও প্রকাশিত, প্রকাশসাল- ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬
- সত্য ও ন্যায়ের উপর আমাদের জাতীয়তা যদি প্রতিষ্ঠিত না হয় তবে সে জাতীয়তা একদিনও টিকিতে পারে না।
- নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু, শ্রীগোপাললাল সান্যাল কর্ত্তৃক সঙ্কলিত ও প্রকাশিত, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১২৯ - ১৩০
- কর্তব্যটা relative, higher call এলে lower call ভেসে যায়।
- বন্ধু হেমন্তকুমার সরকারকে লেখা চিঠি
- আমরা এখানে এসে কয়েকদিন সূতা কাটি। তারপর চরকাটা ভেঙ্গে যায় এবং যাঁর খুব বেশী উৎসাহ ছিল তিনি এখান থেকে বদলী হয়ে যান। তাই এখন ভাঙ্গা চরকাটা আলমারীর উপর তোলা আছে। একবার ইচ্ছা হয়েছিল কলকাতায় ডাক্তার পি. সি. রায়কে লিখি একটা চরকা পাঠাতে। তারপর ভাবলাম যে হয়তো পথে আসতে ২ ভেঙ্গে যাবে, তাই লেখা হ’ল না।
- বিভাবতী বসুকে লিখিত সুভাষচন্দ্র বসুর পত্র, মান্দালয় জেল, ইং ১৬ই ডিসেম্বর (১৯২৫), পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু, প্রকাশক- এম. সি. সরকার এন্ড সন্স লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২০৭
সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে উক্তি
[সম্পাদনা]- বহু অভিজ্ঞতাকে আত্মসাৎ করেছে তোমার জীবন। কর্ত্তব্য-ক্ষেত্রে দেখলুম তোমার যে পরিণতি তার থেকে পেয়েছি তোমার প্রবল জীবনীশক্তির প্রমাণ। এই শক্তির কঠিন পরীক্ষা হয়েছে কারা-দুঃখে, নির্ব্বাসনে, দুঃসাধ্য রোগের আক্রমণে। কিছুতে তোমাকে অভিভূত করেনি। তোমার চিত্তকে করেছে প্রসারিত, তোমার দৃষ্টিকে নিয়ে গেছে দেশের সীমা অতিক্রম করে ইতিহাসের দূর বিস্তৃত ক্ষেত্রে। দুঃখকে তুমি করে তুলেছ সুযোগ, বিঘ্নকে করেছ সোপান। সে সম্ভব হয়েছে, যেহেতু কোন পরাভবকে তুমি একান্ত সত্য বলে মাননি। তোমার এই চরিত্র শক্তিকেই বাংলাদেশের অন্তরের মধ্যে সঞ্চারিত করে দেবার প্রয়োজন সকলের চেয়ে গুরুতর।
- "সুভাষ বসু দেশপ্রেমিকদের মধ্যে একজন রাজপুত্র..."
- মহাত্মা গান্ধী, মহাত্মা গান্ধীর সংগৃহীত কাজ (আহমেদাবাদ: প্রকাশনা বিভাগ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, ভারত সরকার, নবজীবন ট্রাস্ট, ১৯৭২–৭৮), ভলিউম LXXXIII (৮৩৩), পৃ. ১৩৫
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিসংকলনে সুভাষচন্দ্র বসু রচিত অথবা সম্পর্কিত রচনা রয়েছে।
উইকিমিডিয়া কমন্সে সুভাষচন্দ্র বসু সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।