বাগান

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
আমাদের ফুলের বাগানে এবার নানা রঙের ফুল ফুটে বেশ শোভা ধরেছে। তবে এগুলি অধিকাংশই Season Flower। সুতরাং শীতের শেষে গরমের প্রতাপ আরম্ভ হ’লে অদৃশ্য হয়ে যাবে। আপাততঃ বাগানের দিকে তাকালে মনটা বেশ প্রসন্ন হয়।—সুভাষচন্দ্র বসু

বাগান হলো বাড়ির সংলগ্ন বা বাইরে জমির একটি পরিকল্পিত স্থান যা গাছপালা, ফুল এবং ফল চাষের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি উদ্ভিদ সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। বাগানে প্রাকৃতিক এবং মানুষের সৃষ্ট উভয় উপকরণই থাকে। অনেকে শখ হিসাবে বাগান করেন কারণ এটি তাদের মনকে সতেজ করার এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে থাকার সুযোগ করে দেয়। বাগান অনেক ধরনের হয়ে থাকে। বাড়ীর পার্শ্ববর্তী ভূমি, ভবনের ছাদ অথবা গ্রীনহাউসের মাধ্যমে যেমন বাগান তৈরী করা হয় তেমনি আবার বোটানিক্যাল গার্ডেন, চিড়িয়াখানা প্রভৃতির মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বাগান তৈরী হয়।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • সবিস্ময়ে সে চারিদিকে চাহিয়া দেখিল,—সে পরী নাই, সে বাগান নাই—সে কিছুই আর নাই, তাহা অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর আর একটি বাগানে সে একাকী আসিয়া পড়িয়াছে। কি চমৎকার বাগান। এমন বাগান সে জন্মে কখনও দেখে নাই। এ কি নন্দন কানন? দিদিমার কাছে লাবণ্য স্বর্গের যে নন্দন কাননের গল্প শুনিয়াছে, এ কি সেই কানন! বাগান আলো করিয়া গাছে গাছে কি সুন্দর ফুল ফুটিয়া আছে!
    • স্বর্ণকুমারী দেবী, সুবুদ্ধির উপদেশ, গল্পস্বল্প- স্বর্ণকুমারী দেবী, চতুর্থ সংস্করণ, প্রকাশসাল- ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দ (১৩০০ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯
  • বাড়ীর সাম্‌নেই বাগান, এবং বাগানের সম্মুখেই গঙ্গা বহিতেছে। আমাদের শোবার ঘরের নীচেই দক্ষিণের দিকে খানিকটা জমি মেহেদির বেড়া দিয়া ঘিরিয়া আমার স্ত্রী নিজের মনের মত একটুক্‌রা বাগান বানাইয়াছিলেন। সমস্ত বাগানটির মধ্যে সেই খণ্ডটিই অত্যন্ত সাদাসিধা এবং নিতান্ত দিশী।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নিশীথে, গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশসাল- ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩০২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪২
  • আমাদের ফুলের বাগানে এবার নানা রঙের ফুল ফুটে বেশ শোভা ধরেছে। তবে এগুলি অধিকাংশই Season Flower। সুতরাং শীতের শেষে গরমের প্রতাপ আরম্ভ হ’লে অদৃশ্য হয়ে যাবে। আপাততঃ বাগানের দিকে তাকালে মনটা বেশ প্রসন্ন হয়।
    • সুভাষচন্দ্র বসু, বিভাবতী বসুকে লিখিত পত্র, পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২)-সুভাষচন্দ্র বসু, প্রকাশক- এম. সি. সরকার এন্ড সন্স লিমিটেড, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৭০
  • বসন্ত রাখ্যাছে বান্ধিয়া কুমার বাগানে।
    চল কন্যা যাইবানি বাগান দরিশনে॥
    ভাইয়ের লাগাইল বাগান ভইনে নাইসে দেখে।
    একবার সার্থক জন্ম নিজ নয়নে দেখে॥
    • জীরালনী, সম্পাদনা- দীনেশচন্দ্র সেন, পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন, প্রকাশক- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা সংস্থা, প্রকাশসাল- ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৩৭
  • জ্যোতিকাকামশায় থাকেন তখন ফরাশডাঙার বাগানে। আমরা থাকি চাঁপদানির বাগানে। এই দুই বাগান আমাদের দুই পরিবারের। আমরা তখন ছোটো ছোটো ছেলে। এক-একদিন বেড়াতে যেতুম ফরাশডাঙার বাগানে যেমন ছেলেরা যায় বুড়োদের সঙ্গে। সেই একদিনের কথা বলছি।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঘরোয়া, একাদশ পরিচ্ছেদ, ঘরোয়া-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক-বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশসাল- ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১২৪
  • আমি যখন হাতে মেখে কালি
    ঘরে ফিরি, সাড়ে চারটে বাজে,
    কোদাল নিয়ে মাটি কোপায় মালী
    বাবুদের ওই ফুল-বাগানের মাঝে।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিচিত্র সাধ, শিশু - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ (১৪২৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৯
  • দিন-পনর ত সেই আম বাগানের মধ্যেই কাটিয়া গেল। দিনের-বেলা কোন বালাই নাই, শুধু রাত্রে মশার কামড়ের জ্বালায় মনে হইত—থাক্‌ মোক্ষসাধন!
    • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত (প্রথম পর্ব), একাদশ পরিচ্ছেদ, শ্রীকান্ত (প্রথম পর্ব)-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক-গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সন্স, সপ্তদশ মুদ্রণ, পৃষ্ঠা ১৫৭
  • শিক্ষাগ্রন্থ বাগানের গাছ নয় যে, সৌখীন লোকে সখ করিয়া তার কেয়ারি করিবে, —কিম্বা সে আগাছাও নয় যে, মাঠে বাটে নিজের পুলকে নিজেই কণ্টকিত হইয়া উঠিবে!
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শিক্ষার বাহন, পরিচয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশসাল- ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩২৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১২২
  • যে স্থানে তারামণি বাস করিত, তাহার অনতিদূরে একটা বাগান আছে, ঐ বাগানের ভিতর ঘাঁটবাধান একটা পুষ্করিণীও আছে। ঐ পুষ্করিণীর জল অনেকটা ভাল বলিয়া নিকটবর্ত্তী দরিদ্র লোকজন ঐ পুষ্করিণীর জলই প্রায় ব্যবহার করিয়া থাকে।
    • প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, মতিয়া বিবি, চতুর্থ পরিচ্ছেদ, মতিয়া বিবি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, প্রকাশক- দারোগার দপ্তর কার্য্যালয়, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩১১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৩
  • আপনার বাগানের কোন স্থানে একটি সুগন্ধ ফুল ফুটিয়াছে তাহাতে বাগান আমোদিত করিয়াছে। বায়ু গন্ধ ছড়াইয়া ফুলের সৌরভ বিকীর্ণ করিতেছে। ফুল তাহা চাহেনা, কিন্তু বাতাস আপনার কার্য্য আপনি করে।
    • শিবাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য, পঞ্চম কথা, বিদ্যাসাগর-প্রবন্ধ - শিবাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য, প্রকাশসাল- ৮৯৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩০৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬৮
  • আমার মনের বাগান বাড়ি তাহার জন্য ছাড়িয়া দিয়াছি সে তাহার বাগানটি আমার জন্য রাখিয়াছে। এ বাগানের কাছে কদর্য্য কিছুই নাই, দুর্গন্ধ কিছুই নাই। পরস্পরের উচিত, যাহাতে নিজের নিজের বাগান পরস্পরের নিকট রমণীর হয়, তাহার জন্য চেষ্টা করা। যত ফুল গাছ রোপণ করা যায়, যত কাঁটাগাছ উপড়াইয়া ফেলা হয় ততই ভাল।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মনের বাগান বাড়ি, বিবিধ প্রসঙ্গ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- আদি ব্রাহ্মসমাজ যন্ত্র, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ (১২৯০ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬
  • এই সে নারীর বাড়ী হয় যেই স্থানে।
    জমিদারটীর এক বাগান সে স্থানে॥
    সেই বাগানের মধ্যে আছে সরােবর।
    এই নারী ছাদে বসি করে তা গােচর॥
    • কালীপ্রসন্ন বিদ্যারত্ন, বেল্লিক রামায়ণ - কালীপ্রসন্ন বিদ্যারত্ন, প্রকাশসাল- ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২০৯
  • প্রতিবেশীর একটি সুন্দর ফলের বাগান ছিল। প্রতিবেশী অতিশয় কৃপণ স্বভাব ছিল। তাহার বাগানের দরজায় আবার একপ্রকাণ্ড কুকুর বাঁধা থাকিত। সুতরাং ফলগুলি দেখিয়া তাহার ক্ষুধাই বাড়িত, কিন্তু তাহার নিবৃত্তি হইবার কোনো আশা ছিল না। সে কুকুর সম্বন্ধে এই কথা শুনিয়াই ভাবিল যে এইবার প্রতিবেশীর ফলের বাগানে যাইতে হইবে। যাহা ভাবিল, কাজেও তাহা করিল। আস্তে আস্তে কুকুরের দিকে পশ্চাৎপদ হইতে লাগিল আর ভাবিতে লাগিল। বুঝি কুকুর পলাইয়াছে— বুঝি এইবার বাগানের ভিতর আসিয়াছি।
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, দুষ্কর্মের প্রতিফল, নানা প্রসঙ্গ : ২, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯৩৬

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]