বাঙালি হিন্দু-মুসলিম
বাঙালি হিন্দু-মুসলিম হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশের বঙ্গ বা বাংলা অঞ্চলে বসবাসকারী দুটি ধর্মীয় সম্প্রদায় যারা একই ভাষাগত ও জাতিগত সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। বাঙালি মুসলিমরা হচ্ছে বাঙালি জাতির মধ্যে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সম্প্রদায়।যেখানে বাঙালি হিন্দুরা দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সম্প্রদায়।
উক্তি[সম্পাদনা]
- মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু-মুসলমান।
মুসলিম তার নয়ন-মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ।।
এক সে আকাশ মায়ের কোলে
যেন রবি শশী দোলে,
এক রক্ত বুকের তলে, এক সে নাড়ির টান।।
এক সে দেশের খাই গো হাওয়া, এক সে দেশের জল,
এক সে মায়ের বক্ষে ফলাই একই ফুল ও ফল।
এক সে দেশের মাটিতে পাই
কেউ গোরে কেউ শ্মাশানে ঠাঁই
এক ভাষাতে মা’কে ডাকি, এক সুরে গাই গান।। - সঙ্গের দিক থেকে আজকাল হিন্দু-মুসলমান পৃথক হয়ে গিয়ে সাম্প্রদায়িক অনৈক্যকে বাড়িয়ে তুলেছে, মনুষ্যত্বের মিলটাকে দিয়েছে চাপা।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কালান্তর, হিন্দুমুসলমান। শ্রাবণ, ১৩৩৮
- নানা আশু ও সুদূর কারণে, অনেক দিনের পুঞ্জিত অপরাধে হিন্দু-মূসলমানের মিলনসমস্যা কঠিন হয়েছে, সেইজন্যেই অবিলম্বে এবং দৃঢ় সংকল্পের সঙ্গে তার সমাধানে প্রবৃত্ত হতে হবে। অপ্রসন্ন ভাগ্যের উপর রাগ করে তাকে দ্বিগুণ হন্যে করে তোলা চোরের উপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাওয়ার মতো।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কালান্তর, হিন্দুমুসলমান। শ্রাবণ, ১৩৩৮
- এই বাংলার হিন্দু-মুসলিম, বাঙালি-ননবেঙ্গলি যারা আছে তারা আমাদের ভাই, তাদের রক্ষার দায়িত্ব আমাদের উপর, আমাদের যেন বদনাম না হয়।
- আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।এটি কোনো আদর্শের কথা নয়; এটি একটি বাস্তব সত্য। মা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারায় ও ভাষায় বাঙালিত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে মালা-তিলক-টিকিতে কিংবা টুপি-লুঙ্গি-দাড়িতে ঢাকবার জো-টি নেই।
- যে বাঙালি হিন্দু-মুসলমান একই জল মাটিতে বর্ধিত ও একই সংস্কৃতির উত্তরাধিকারী, উহাদিগকে বিভিন্ন করিবার চেষ্টা গুরুতর অপরাধ।
- শরৎচন্দ্র বসু। ৪ ফেব্রয়ারি,১৯৩৯ জলপাইগুড়ি।
- হিন্দু ও মুসলমান যে বহুশতাব্দীকাল পরস্পরের সহিত প্রীতির সম্পর্কে আবদ্ধ হইয়া বাস করিতেছিলেন, এই গীতিগুলিতে তাহার অকাট্য প্রমাণ আছে।
- ময়মনসিংহ-গীতিকা বইয়ের ভূমিকাতে দীনেশচন্দ্র সেন এটি লিখেছিলেন।
- আমি হিন্দুর তরফ থেকেই বলছি, মুসলমানের ত্রুটিবিচারটা থাক্-- আমরা মুসলমানকে কাছে টানতে যদি না পেরে থাকি তবে সেজন্যে যেন লজ্জা স্বীকার করি। অল্পবয়সে যখন প্রথম জমিদারি সেরেস্তা দেখতে গিয়েছিলুম তখন দেখলুম, আমাদের ব্রাহ্মণ ম্যানেজার যে-তক্তপোষে গদিতে বসে দরবার করেন সেখানে এক ধারে জাজিম তোলা, সেই জায়গাটা মুসলমান প্রজাদের বসবার জন্যে; আর জাজিমের উপর বসে হিন্দু প্রজারা। এইটে দেখে আমার ধিক্কার জন্মেছিল।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কালান্তর, হিন্দুমুসলমান। শ্রাবণ, ১৩৩৮