হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক
অবয়ব
বাঙালি হিন্দু-মুসলিম হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশের বঙ্গ বা বাংলা অঞ্চলে বসবাসকারী দুটি ধর্মীয় সম্প্রদায় যারা একই ভাষাগত ও জাতিগত সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। বাঙালি মুসলিমরা হচ্ছে বাঙালি জাতির মধ্যে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সম্প্রদায়।যেখানে বাঙালি হিন্দুরা দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সম্প্রদায়।
উক্তি
[সম্পাদনা]- মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু-মুসলমান।
মুসলিম তার নয়ন-মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ।। - বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ,
বাংলার খ্রিষ্টান, বাংলার মুসলমান,
আমরা সবাই বাঙালি। - তবে তুমি বুঝি বাঙালি জাতির ইতিহাস শোনো নাই-
‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।’
একসাথে আছি, একসাথে বাঁচি, আজো একসাথে থাকবোই
সব বিভেদের রেখা মুছে দিয়ে সাম্যের ছবি আঁকবোই।- সৈয়দ শামসুল হক। "আমার পরিচয়" কবিতার অংশ।
- হিন্দু-মুসলমান মিলিত বাঙালি জাতি গড়িয়া তুলিতে বহু অন্তরায় আছে, কিন্তু তাহা যে করিতেই হইবে।
- ইংরেজি-সাহিত্য হতে গ্রিক পুরাণের ভাব বাদ দেওয়ার কথা কেউ ভাবতে পারে না। বাংলা-সাহিত্য হিন্দু-মুসলমানের উভয়েরই সাহিত্য। এতে হিন্দু দেব-দেবীর নাম দেখলে মুসলমানের রাগ করা যেমন অন্যায় হিন্দুরও তেমনই মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবন-যাপনের মধ্যে নিত্য-প্রচলিত মুসলমানি শব্দ তাদের লিখিত সাহিত্যে দেখে ভুরু কোঁচকানো অন্যায়। আমি হিন্দু-মুসলমানের মিলনে পরিপূর্ণ বিশ্বাসী। তাই তাদের এ-সংস্কারে আঘাত হানার জন্যই মুসলমানি শব্দ ব্যবহার করি, বা হিন্দু দেব-দেবীর নাম নিই। অবশ্য এর জন্যে অনেক জায়গায় আমার কাব্যের সৌন্দর্য হানি হয়েছে। তবু আমি জেনে শুনেই তা করেছি।
- সঙ্গের দিক থেকে আজকাল হিন্দু-মুসলমান পৃথক হয়ে গিয়ে সাম্প্রদায়িক অনৈক্যকে বাড়িয়ে তুলেছে, মনুষ্যত্বের মিলটাকে দিয়েছে চাপা।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কালান্তর, হিন্দুমুসলমান। শ্রাবণ, ১৩৩৮
- নানা আশু ও সুদূর কারণে, অনেক দিনের পুঞ্জিত অপরাধে হিন্দু-মূসলমানের মিলনসমস্যা কঠিন হয়েছে, সেইজন্যেই অবিলম্বে এবং দৃঢ় সংকল্পের সঙ্গে তার সমাধানে প্রবৃত্ত হতে হবে। অপ্রসন্ন ভাগ্যের উপর রাগ করে তাকে দ্বিগুণ হন্যে করে তোলা চোরের উপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাওয়ার মতো।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কালান্তর, হিন্দুমুসলমান। শ্রাবণ, ১৩৩৮
- হিন্দুরা যদি মুসলমানের মনে আস্থা সৃষ্টি করিতে না পারে, তবে হিন্দু-মুসলিম-ঐক্য আসিবে না। হিন্দু-মুসলিম ঐক্য ব্যতীত আমাদের স্বরাজের দাবি চিরকাল কল্পনার বস্তুই থাকিয়া যাবে।
- এই বাংলার হিন্দু-মুসলিম, বাঙালি-ননবেঙ্গলি যারা আছে তারা আমাদের ভাই, তাদের রক্ষার দায়িত্ব আমাদের উপর, আমাদের যেন বদনাম না হয়।
- আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।এটি কোনো আদর্শের কথা নয়; এটি একটি বাস্তব সত্য। মা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারায় ও ভাষায় বাঙালিত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে মালা-তিলক-টিকিতে কিংবা টুপি-লুঙ্গি-দাড়িতে ঢাকবার জো-টি নেই।
- যে বাঙালি হিন্দু-মুসলমান একই জল মাটিতে বর্ধিত ও একই সংস্কৃতির উত্তরাধিকারী, উহাদিগকে বিভিন্ন করিবার চেষ্টা গুরুতর অপরাধ।
- শরৎচন্দ্র বসু। ৪ ফেব্রয়ারি,১৯৩৯ জলপাইগুড়ি।
- ...দেশবন্ধুকে লইয়া বা তাঁহার মৃত্যুর পর হাতজোড় করিয়া নিখিল-ভারত কংগ্রেস-কমিটির মুখ চাহিয়া বাঙ্গলার সমস্যার মীমাংসার জন্য বসিয়া থাকিলে চলিবে না। হিন্দু-মুসলমান-সমস্যা নিখিলভারতের দিক হইতে মীমাংসিত হইলেও বাঙ্গলার সমস্যা বাঙ্গালীকেই সমাধান করিতে হইবে।
- হিন্দু-মুসলমান প্যাক্ট ও তাহার ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আলোচনা প্রসঙ্গে লিখিত সুভাষচন্দ্র বসুর ইংরেজী চিঠির অংশবিশেষের বঙ্গানুবাদ।[৮]
- হিন্দু ও মুসলমান যে বহুশতাব্দীকাল পরস্পরের সহিত প্রীতির সম্পর্কে আবদ্ধ হইয়া বাস করিতেছিলেন, এই গীতিগুলিতে তাহার অকাট্য প্রমাণ আছে।
- ময়মনসিংহ-গীতিকা বইয়ের ভূমিকাতে দীনেশচন্দ্র সেন এটি লিখেছিলেন।
- আমি হিন্দুর তরফ থেকেই বলছি, মুসলমানের ত্রুটিবিচারটা থাক্-- আমরা মুসলমানকে কাছে টানতে যদি না পেরে থাকি তবে সেজন্যে যেন লজ্জা স্বীকার করি। অল্পবয়সে যখন প্রথম জমিদারি সেরেস্তা দেখতে গিয়েছিলুম তখন দেখলুম, আমাদের ব্রাহ্মণ ম্যানেজার যে-তক্তপোষে গদিতে বসে দরবার করেন সেখানে এক ধারে জাজিম তোলা, সেই জায়গাটা মুসলমান প্রজাদের বসবার জন্যে; আর জাজিমের উপর বসে হিন্দু প্রজারা। এইটে দেখে আমার ধিক্কার জন্মেছিল।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কালান্তর, হিন্দুমুসলমান। শ্রাবণ, ১৩৩৮
- হিন্দু না ওরা মুসলিম এই জিজ্ঞাসে কোন জন হে, কাণ্ডারি বল ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা’র ।
- কাজী নজরুল ইসলাম
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
উইকিপিডিয়ায় হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।