বুধ গ্রহ
অবয়ব
বুধ (ইংরেজি: Mercury; আ-ধ্ব-ব: [ˈmɜ(ɹ).kjə.ɹi]) মার্কারি) সৌরজগতের প্রথম এবং ক্ষুদ্রতম গ্রহ। এটি সূর্যের সর্বাপেক্ষা নিকটতম গ্রহ। এর কোনো উপগ্রহ নাই। এটি সূর্যকে প্রতি ৮৮ দিনে একবার প্রদক্ষিণ করে। এর উজ্জ্বলতার আপাত মান -২.৬ থেকে +৫.৭ পর্যন্ত হয়ে থাকে। কিন্তু একে পৃথিবী থেকে সহজে দেখা যায় না, কারণ সূর্যের সাথে এর বৃহত্তম কৌণিক পার্থক্য হচ্ছে মাত্র ২৮.৩ ডিগ্রী। কেবল সকাল ও সন্ধ্যার ক্ষীণ আলোয় এটি দৃশ্যমান হয়। বুধ গ্রহ সম্বন্ধে সংগৃহীত তথ্যের পরিমাণ তুলনামূলক কম। বুধ অভিমুখী নভোযান মেরিনার ১০ ১৯৭৪ - ১৯৭৫ সালে অনুসন্ধানী অভিযান চালিয়েছিল এবং মেসেঞ্জার ২০০৪ - ২০১৫ সালে ৪০০০ বার অনুসন্ধানী অভিযান চালিয়েছিল।
উক্তি
[সম্পাদনা]- সৌরজগতে আটটি "গ্রহ" রয়েছে। বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুন। এছাড়াও"বামন গ্রহ" নামে একটি নতুন স্বতন্ত্র শ্রেণী বিদ্যমান। "গ্রহ" এবং "বামন গ্রহ" দুটি পৃথক শ্রেণীর বস্তু। "বামন গ্রহ" বিভাগের প্রথম সদস্যরা হলেন সেরেস , প্লুটো এবং ২০০৩ ইউবি৩১৩ (অস্থায়ী নাম)।
- ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন (IAU) প্রদত্ত সংজ্ঞা : আইএইউ০৬০৩— নিউজ রিলিজ , ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন, ২০০৬।
- বুধের গায়ে ঝাপসা কিছু কিছু দাগ দেখা যায় সেইটে লক্ষ্য করে বোঝা গেছে কেবল ওর এক পিঠ ফেরানো সূর্যের দিকে। সূর্যের চারদিক ঘুরে আসতে ওর লাগে ৮৮ দিন। নিজের মেরুদণ্ড ঘুরতেও ওর লাগে তাই। সূর্য প্রদক্ষিণের পথে পৃথিবীর দৌড়, প্রতি সেকেণ্ডে উনিশ মাইল। বুধগ্রহের দৌড় তাকে ছাড়িয়ে গেছে, তার বেগ প্রতি সেকেণ্ডে ত্রিশ মাইল। একে ওর রাস্তা ছোটো তাতে ওর ব্যস্ততা বেশি, তাই পৃথিবীর শিকি সময়েই ওর প্রদক্ষিণ সারা হয়ে যায়। বুধগ্রহের প্রদক্ষিণের যে পথ, সূর্য ঠিক তার কেন্দ্রে নেই, একটু এক পাশে আছে। সেইজন্যে ঘোরবার সময় বুধগ্রহ কখনো সূর্যের অপেক্ষাকৃত কাছে আসে কখনো যায় দূরে।
- গ্রহলোক, বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫০ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৩।
- চাঁদের মতোই বুধের ওপরতলে আছে অসংখ্য গর্ত, এটা এক বন্ধুর এলাকা। ৩.৫ থেকে ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে বুধের ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল লাভার প্রবাহ, এবং এটি প্রচণ্ডভাবে আহত হয়েছিলো আন্তগ্রহ বস্তুদের আঘাতে। বুধের ভূভাগ চাঁদের ভূভাগের মত- ধুলোতে আচ্ছন্ন পাহাড় সেখানে আবৃত হয়ে আছে শিলাস্তর। বুধের আকাশ কুষ্ণ; তার দিনের আকাশে জ্বলে পৃথিবীর সূর্যের থেকে ২.৫ গুণ সূর্য; রাতের আকাশে অনেক সময় জ্বলজ্বল করে আমাদের আকাশের যে-কোনো তারার থেকে উজ্জ্বল দুইটি গ্রহ: নীলাভ পৃথিবী আর হলুদাব-শাদা শুক্র। বুধে কোধো বায়ুমণ্ডল নেই; তবে আছে সোডিয়াম অণুর প্রাচুর্য।
- মহাবিশ্ব-হুমায়ুন আজাদ; প্রকাশক- ওসমান গণি আগামী প্রকাশনী, ৩৬ বাংলাবাজার, ঢাকা; প্রকাশসাল- ফেব্রুয়ারি ২০০০ খ্রিস্টাব্দ; পৃষ্ঠা ৯৯-১০০।
- পৃথিবী কত বড় তাহা তোমরা জান। এখন যদি কেহ বুধকে ভাঙিয়া একটা পৃথিবী গড়িবার চেষ্টা করে, তাহা হইলে একুশটা বুধকে না ভাঙিলে একটা পৃথিবী গড়া যাইবে না। সূর্য্য কি প্রকাণ্ড জিনিস, তাহা তোমরা শুনিয়াছ। তোমরা যদি সূর্য্যের সহিত বুধের তুলনা করিতে যাও, তাহা হইলে একটা হাতীর সঙ্গে একটা মশার তুলনা করা হয়। এক হাত ফাঁক-ওয়ালা একটা মাঝারি জালাকে যদি সূর্য্য বলিয়া মনে করা যায়, তাহা হইলে বুধ হইয়া দাঁড়ায় একটি সরিসার আধখানার সমান। সূর্য্যের সন্তানগুলির মধ্যে বুধ কত ছোট একবার ভাবিয়া দেখ।
- গ্রহ-নক্ষত্র- জগদানন্দ রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, প্রকাশস্থান- এলাহাবাদ (প্রয়াগরাজ), প্রকাশসাল- ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩২২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯৭
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় বুধ গ্রহ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিমিডিয়া কমন্সে বুধ গ্রহ সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।