বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
অবয়ব
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (২৬ জুন ১৮৩৮ - ৮ এপ্রিল ১৮৯৪) ছিলেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি ঔপন্যাসিক। বাংলা গদ্য ও উপন্যাসের বিকাশে অপরিসীম অবদানের জন্যে তিনি বাংলা সাহিত্যে অমর হয়ে রয়েছেন। তাকে প্রথম আধুনিক বাংলা ঔপন্যাসিক হিসেবে গণ্য করা হয়।
উক্তি
[সম্পাদনা]- তুমি বসন্তের কোকিল, বেশ লোক। যখন ফুল ফুটে, দক্ষিণ বাতাস বহে, এ সংসার সুখের স্পর্শে শিহরিয়া উঠে, তখন তুমি আসিয়া রসিকতা আরম্ভ কর। আর যখন দারুণ শীতে জীবলোকে থরহরি কম্প লাগে, তখন কোথায় থাক, বাপু? যখন শ্রাবণের ধারায় আমার চালাঘরে নদী বহে, যখন বৃষ্টির চোটে কাক চিল ভিজিয়া গোময় হয়, তখন তোমার মাজা মাজা কালো কালো দুলালি ধরণের শরীরখানি কোথায় থাকে? তুমি বসন্তের কোকিল, শীত বর্ষার কেহ নও।
- [[s:কমলাকান্ত/কমলাকান্তের দপ্তর/সপ্তম সংখ্যা|বসন্তের কোকিল - কমলাকান্তের দপ্তর]], কমলাকান্ত - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ (১২৯২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৪
- এ সংসারে বিশেষ দুঃখ এই যে, মরিবার উপযুক্ত সময়ে কেহ মরে না। অসময়ে সবাই মরে।
- কৃষ্ণকান্তের উইল - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশক- বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ প্রকাশনা সংস্থা, প্রকাশসাল- ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫১ বঙ্গাব্দ), দ্বিতীয় খণ্ড, একাদশ পরিচ্ছেদ, পৃষ্ঠা ৯৯
- “পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ?”এ ধ্বনি নবকুমারের কর্ণে প্রবেশ করিল। কি অর্থ, কি উত্তর করিতে হইবে, কিছুই মনে হইল না। ধ্বনি যেন হর্ষবিকম্পিত হইয়া বেড়াইতে লাগিল; যেন পবনে সেই ধ্বনি বহিল; বৃক্ষপত্রে মর্মারিত হইতে লাগিল; সাগরনাদে যেন মন্দীভূত হইতে লাগিল। সাগরবসনা পৃথিবী সুন্দরী; রমণী সুন্দরী; ধ্বনিও সুন্দর; হৃদয়তন্ত্রীমধ্যে সৌন্দর্য্যর লয় মিলিতে লাগিল।
- কপালকুণ্ডলা - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দ (১২৭৪ বঙ্গাব্দ), প্রথম খণ্ড, পঞ্চম পরিচ্ছেদ, পৃষ্ঠা ১৮-১৯
- পুষ্প আপনার জন্য ফুটে না। পরের জন্য তোমার হৃদয়-কুসুমকে প্রস্ফুটিত করিও।
- কমলাকান্তের দপ্তর, কমলাকান্ত - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ (১২৯২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭
- তিলোত্তমা অপাঙ্গে অর্দ্ধদৃষ্টি করিতে জানিতেন না, দৃষ্টিতে কেবল স্পষ্টতা আর সরলতা; দৃষ্টির সরলতাও বটে, মনের সরলতাও বটে; তবে যদি তাঁহার পানে কেহ চাহিয়া দেখিত, তবে তৎক্ষণাৎ কোমল পল্লব দুখানি পড়িয়া যাইত; তিলোত্তমা তখন পরাতল ভিন্ন অন্যত্র দৃষ্টি করিতেন না।
- দুর্গেশনন্দিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক- গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সন্স, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৩
- বিপৎকালে সঙ্কোচ মূঢ়ের কাজ।
- কপালকুণ্ডলা - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ (১২৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৩
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে উক্তি
[সম্পাদনা]- রচনা এবং সমালোচনা এই উভয় কার্যের ভার বঙ্কিম একাকী গ্রহণ করাতেই বঙ্গসাহিত্য এত সত্বর এমন দ্রুত পরিণতি লাভ করিতে সক্ষম হইয়াছিল।
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আধুনিক সাহিত্য- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ (১২৯২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৩
- বঙ্কিম সর্বপ্রথমে হাস্যরসকে সাহিত্যের উচ্চশ্রেণীতে উন্নীত করেন। তিনিই প্রথমে দেখাইয়া দেন যে, কেবল প্রহসনের সীমার মধ্যে হাস্যরস বদ্ধ নহে; উজ্জল শুভ্র হাস্য সকল বিষয়কেই আলোকিত করিয়া তুলিতে পারে। তিনিই প্রথম দৃষ্টান্তের দ্বারা প্রমাণ করাইয়া দেন যে, এই হাস্যজ্যোতির সংস্পর্শে কোনো বিষয়ের গভীরতার গৌরব হ্রাস হয় না, কেবল তাহার সৌন্দর্য এবং রমণীয়তার বৃদ্ধি হয়, তাহার সর্বাংশের প্রাণ এবং গতি যেন সুস্পষ্টরূপে দীপ্যমান হইয়া উঠে।
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আধুনিক সাহিত্য- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ (১২৯২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৮
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিসংকলনে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত অথবা সম্পর্কিত রচনা রয়েছে।
উইকিমিডিয়া কমন্সে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।