বিষয়বস্তুতে চলুন

বায়ু

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

বায়ু পৃথিবীকে ঘিরে থাকা গ্যাসীয় আবরণ যা পৃথিবী তার মধ্যাকর্ষণ শক্তি টানে পৃথিবী-সংশ্লিষ্ট হয়ে রয়েছে। শ্বাস-প্রশ্বাস ও উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণের জন্য ব্যবহৃত বায়ুমন্ডলীয় গ্যাস মিশ্রণের প্রদত্ত প্রচলিত নাম বায়ু বা বাতাস। বায়ু ছাড়া পৃথিবীতে জীবন সম্ভব নয়। শুষ্ক বায়ুর মূল উপাদান নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন গ্যাস। এছাড়া সামান্য পরিমাণে আর্গন, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং অন্যান্য গ্যাস থাকে।

উক্তি

[সম্পাদনা]
  • আমরা যতদূর জানি, জল বায়ু ভিন্ন জীবের বসতি নাই; যেখানে জল বা বায়ু নাই, সেখানে আমাদের জ্ঞানগোচরে, জীব থাকিতে পারে না। যদি চন্দ্রলোকে জল বায়ু থাকে, তবে সেখানে জীব থাকিতে পারে; যদি জল বায়ু না থাকে, তবে জীব নাই, এক প্রকার সিদ্ধ করিতে পারি।
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিজ্ঞানরহস্য- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশসাল- ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দ (১২৯১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৬-৭৭
  • বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল—
    পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান॥
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গীতবিতান- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দ (১৪০০ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৫৫
  • উঠে চারু বাস বায়ু আমোদিয়া
    ঢলিতে ঢলিতে যায়;
    চলে প্রাণিগণ মুগ্ধ নব রসে
    বায়ু, গন্ধে স্নিগ্ধকায়।
  • দীপ জ্বালাতে অঙ্গারাম্ল নামক একপ্রকার বায়ু জন্মে। সেই বায়ু প্রদীপের শিখায় মুখ হইতে বেগে ঊর্দ্ধে উঠিয়া যায়। বাতাসে অম্লজান নামক বায়ু আছে, তাহা আছে বলিয়াই আগুন জ্বলিতে পারে। বড় দীপটি ছোট দীপের নীচে ধরিলে, তাহা হইতে অঙ্গারাম্ল বায়ু উঠিয়া ছোট দীপটিকে ঘিরিয়া ফেলে, আর বাতাসের অম্লজান আসিয়া তাহাকে জ্বালাইতে পারে না। কাজেই সে নিবিয়া যায়।
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, নানা প্রসঙ্গ : ১, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯৩৪-৯৩৫
  • বায়ু বহে মৃদু মন্দ, মধুর চাঁপার গন্ধ
    পাতার বিতান হতে আসে ভেসে ভেসে।
    • স্বর্ণকুমারী দেবী, সন্ধ্যা, গল্পস্বল্প- স্বর্ণকুমারী দেবী, চতুর্থ সংস্করণ, প্রকাশসাল- ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দ (১৩০০ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৩
  • বায়ু, যাঁর রূপ একেবারেই নেই ধ্বনি আছে, পদ নেই কিন্তু পদক্ষেপের চিহ্ন যিনি রেখে যান, অঙ্গ যাঁর দেখি না কিন্তু স্পর্শ করেন যিনি শীতল বা উষ্ণ, এই বায়ুকে রূপ দিয়ে নিরূপিত করা অন্যমনস্ক ভাবে তো যায় না।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর , শিল্পের সচলতা ও অচলতা, বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর , প্রকাশক- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা সংস্থা, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৪
  • তৈল জল ও বায়ু এই পদার্থত্রয়ের সম্মিলনে, ভাসমান তৈলবিন্দুর বহির্ভাগে, তৈল ও বায়ু মধ্যে, ইহার নিম্নে জল ও তৈল মধ্যে এবং বাহিরে জল ও বায়ু মধ্যে, পৃথক্ গুণসম্পন্ন তিনটি আবরণ দৃষ্ট হয়। আবরণত্রয়ের আকুঞ্চন-শক্তি, যখন তৈলবায়ু ও তৈলজলের মধ্যস্থ আবরণদ্বয়ের আকুঞ্চন-শক্তির সমষ্টির সহিত সমান বা তদপেক্ষা অধিক হয়, তখন ইহা ক্ষুদ্র লেন্সের আকারে জলে ভাসিতে থাকিবে।
    • জগদানন্দ রায়, বিম্ব, প্রাকৃতিকী- জগদানন্দ রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, প্রকাশস্থান- এলাহাবাদ (প্রয়াগরাজ), প্রকাশসাল- ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩২১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮০
  • ঝাউ-শাখা দোলে বায়ু-হিল্লোলে—লাউএর মাচায় আলোর ঢেউ,
    এদিকে আঁধার ওদিকে আলোক—এমন দেখেছ তোমরা কেউ?
    • সুনির্মল বসু, হলুদ চাঁদ, সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা- সুনির্মল বসু, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯৯
  • আমরা যখন শ্বাস-প্রশ্বাস করি তখন প্রশ্বাসের সঙ্গে এক প্রকার বিষাক্ত বায়ু বাহির হইয়া যায়; তাহাকে অঙ্গারক বায়ু বলে। ইহা যদি পৃথিবীতে জমিতে থাকে তবে সকল জীবজন্তু অল্পদিনের মধ্যে এই বিষাক্ত বায়ু গ্রহণ করিয়া মরিয়া যাইতে পারে। বিধাতার করুণার কথা ভাবিয়া দেখ। যাহা জীবজন্তুর পক্ষে বিষ, গাছ তাহাই আহার করিয়া বাতাস পরিষ্কার করিয়া দেয়। গাছের পাতার উপর যখন সূর্য্যের আলোক পড়ে তখন পাতাগুলি সূর্য্যের তেজের সাহায্যে অঙ্গারক বায়ু হইতে অঙ্গার বাহির করিয়া লয়।
    • জগদীশচন্দ্র বসু, উদ্ভিদের জন্ম ও মৃত্যু, অব্যক্ত - জগদীশচন্দ্র বসু, তৃতীয় সংস্করণ, প্রকাশক- বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২১ খ্রিস্টাব্দ (১৩২৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৭
  • এমত নহে যে একেবারে বায়ু বহিতেছিল না; মধু মাসের দেহস্নিগ্ধকর বায়ু; অতিমন্দ; একান্ত নিঃশব্দ বায়ু মাত্র; তাহাতে কেবল মাত্র বৃক্ষের সর্ব্বাগ্রভাগারূঢ় পত্রগুলিন হেলিতেছিল, কেবলমাত্র আভূমিপ্রণত শ্যামালতা দুলিতেছিল; কেবল মাত্র নীলাম্বরসঞ্চারী ক্ষুদ্র শ্বেতাম্বুদখণ্ড গুলিন ধীরে ধীরে চলিতেছিল। কেবল মাত্র, তদ্রূপ বায়ু সংসর্গে সম্ভুক্ত পূর্ব্ব সুখের অস্পষ্ট স্মৃতি হৃদয়ে অল্প জাগরিত হইতেছিল।
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কপালকুণ্ডলা, চতুর্থ খণ্ড — তৃতীয় পরিচ্ছেদ, কপালকুণ্ডলা- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশসাল- ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ (১২৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১২১
  • সেবা যত্ন যতদূর সম্ভব তার কোনই ত্রুটি নাই। বায়ু পরিবর্ত্তন, ঘরের বজরায় গঙ্গাবক্ষে বায়ু সেবন—সবই হইল, শেষে একদিন সেই অমূল্য জীবন-প্রদীপটি নির্ব্বাপিত হইয়া গেল। সজ্ঞানে সানন্দে সর্ব্বকর্ম্মসমাপ্তির প্রশান্ত পরিতৃপ্তির সহিত সে যেন মহাপ্রস্থান, মৃত্যু নয়,—অমরত্বের পথে বিজয়যাত্রা!
    • অনুরূপা দেবী, আলোছায়া, ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড পাবলিশিং কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫১
  • নীরব গিরিলোক। পতঙ্গের কণ্ঠধ্বনি বায়ুতে। ধীর পদে হর দেহলিতে। সেখানে উপবিষ্টা পার্বতী। হরযোগীর করতলের করোটীখানি উত্থিতপার্বতী সমুখে। হর কণ্ঠে প্রার্থনা:
    অন্নদা অন্নং দেহি।
  • গণতন্ত্র হল সেই স্বাস্থ্যকর এবং বিশুদ্ধ বায়ু যা ছাড়া একটি সমাজতান্ত্রিক গণসংগঠন পূর্ণাঙ্গ জীবন যাপন করতে পারে না।
    • মিখাইল গর্বাচেভ, ২৭তম পার্টি কংগ্রেসে বক্তৃতা, মস্কো (২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৬)
  • বায়ু, হইতেছে সংসারের প্রাণ, সেই বায়ু রাগিয়া বসিলে কি বিপদই না ঘটিতে পারে। সেই রাগের চোটে বাহিরের বায়ু কোথায় চলিয়া গেল, দেহের ভিতরের বায়ু উৎকট হইয়া উঠিল। নিশ্বাস ফেলিতে না পারিয়া জীবজন্তুর প্রাণ যায় যায়। বায়ুর উৎপাতে সকলের মাথা খারাপ হইয়া গেল, তাহারা এক করিতে আর করিয়া বসে। দেবতাদের অবধি পেট ফাঁপিয়া ফানুসের মতো হইয়া গেল ঠিক যেন উদরীর বেয়ারাম।
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, পুরাণের গল্প, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬৭৭

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]