দেশে বিদেশে
অবয়ব
দেশে বিদেশে সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত একটি ভ্রমণকাহিনি, যা ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সালে লেখকের আফগানিস্তানে ভ্রমণ ও অবস্থানের প্রেক্ষিতে রচিত। এটি সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রকাশিত প্রথম বই। ভ্রমণলিপি হওয়া সত্ত্বেও এটি আফগানিস্তানের লিখিত ইতিহাসের একটি অনবদ্য দলিল।
উক্তি
[সম্পাদনা]অধ্যায় এক
[সম্পাদনা]- বাঙলা শব্দের অন্ত্যদেশে অনুস্বার যোগ করিলে সংস্কৃত হয়; ইংরিজী শব্দের প্রাগদেশে জোর দিয়া কথা বলিলে সায়েবী ইংরিজী হয় অর্থাৎ পয়লা সিলেবলে অ্যাকসেন্ট দেওয়া খারাপ রান্নায় লঙ্কা ঠেসে দেওয়ার মত – সব পাপ ঢাকা পড়ে যায়।
- অধ্যায় এক, পৃ. ৯, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- আমার এক দার্শনিক বন্ধু একদিন বলেছিলেন যে এমেটিন ইনজেকশন নিলে মানুষ নাকি হঠাৎ অত্যন্ত স্যাঁৎসেঁতে হয়ে যায়, ইংরিজীতে যাকে বলে ‘মডলিন’ – তখন নাকি পাশের বাড়ির বিড়াল মারা গেলে মানুষ বালিশে মাথা গুঁজে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে। বিদেশে যাওয়া আর এমেটিন ইনজেকশন নেওয়া প্রায় একই জিনিস।
- অধ্যায় এক, পৃ. ১০, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় পাঁচ
[সম্পাদনা]- দেশভ্রমণকারী গুণীদের মুখে শোনা যে, যাদের গায়ের জোর যেমন বেশী, তাদের স্বভাবও হয় তেমনি শান্ত।
- অধ্যায় পাঁচ, পৃ. ২৩, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় সাত
[সম্পাদনা]- কবিগুরু বাঙালীর অচেনা জিনিস বর্ণনা করতে ভালোবাসতেন না। পাহাড় বাঙলা দেশে নেই – তাঁর আড়াই হাজার গানের কোথাও পাহাড়ের বর্ণনা শুনেছি বলে মনে পড়ে না। … শীতের দেশের সবচেয়ে অপূর্ব দর্শনীয় জিনিস বরফপাত, রবীন্দ্রনাথ নিদেনপক্ষে সে সৌন্দর্য পাঁচ শ' বার দেখেছেন, একবারও বর্ণনা করেননি।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে, অধ্যায় সাত, পৃ. ৩৩, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- কাবুলী বললেন, ‘দুনিয়ার সব পরীক্ষা পাস করার চেয়ে বড় পরীক্ষা খাইবার-পাস পাস করা। অলহামদুলিল্লা (খুদাকে ধন্যবাদ)।’ আমি বললুম, ‘আমেন।’
- অধ্যায় সাত, পৃ. ৩৬, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় নয়
[সম্পাদনা]- ভারতবর্ষেও প্রাণ বেজায় সস্তা – তাই আমরাও বলি 'ধনে-প্রাণে' মেরো না। 'প্রাণে-ধনে' মেরো না কথাটা কখনো শুনিনি।
- অধ্যায় নয়, পৃ. ৪৩, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় দশ
[সম্পাদনা]- ডিমোক্রেসি ডিমোক্রেসি জিগির তুলে বড্ড বেশী চেঁচামেচি করাতে দক্ষিণভারতের এক সাধক বলেছিলেন ‘তাহলে সবাই ঘুমিয়ে পড়। ঘুমন্ত অবস্থায় মানুষে ভেদ থাকে না, সবাই সমান।’
- অধ্যায় দশ, পৃ. ৪৫, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় এগার
[সম্পাদনা]- বাঙালী আর কিছু পারুক না পারুক, বাজে তর্কে খুব মজবুত।
- অধ্যায় এগার, পৃ. ৪৯, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় তেরো
[সম্পাদনা]- কবির তুলনায় দার্শনিক ঢের বেশী হুঁশিয়ার হয়। তাই বোধ হয় কবির হাতে রাষ্ট্রের কি দুরবস্থা হতে পারে, তারই কল্পনা করে প্লেটো তাঁর আদর্শ রাষ্ট্র থেকে ভালোমন্দ সব কবিকেই অবিচারে নির্বাসন দিয়েছিলেন।
- অধ্যায় তেরো, পৃ. ৫৬, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় চোদ্দ
[সম্পাদনা]- এক বৃদ্ধা দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘পালা-পরবে নেমন্তন্ন পেলে অরক্ষণীয়া মেয়ে থাকলে মায়ের মহা বিপদ উপস্থিত হয়। রেখে গেলে গলার আল, নিয়ে গেলে লোকের গাল।’ তারপর বুঝিয়ে বলেছিলেন, ‘বাড়িতে যদি মেয়েকে রেখে যাও তাহলে সমস্তক্ষণ দুর্ভাবনা, ভালো করলুম না মন্দ করলুম; সঙ্গে যদি নিয়ে যাও তবে সক্কলের কাছ থেকে একই গালাগাল, এতদিন ধরে বিয়ে দাওনি কেন?’
- অধ্যায় চোদ্দ, পৃ. ৫৮, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- পণ্ডিতে মুর্খে মিলে আফগানিস্থান সম্বন্ধে যে সব তথ্য আবিষ্কার করেছেন তার মোটামুটি তত্ত্ব এই – আর্যজাতি আফগানিস্থান, খাইবারপাস হয়ে ভারতবর্ষে এসেছিল – পামির, দার্দিস্থান বা পৈশাচভূমি কাশ্মীর হয়ে নয়। বোগাজ-কোই বর্ণিত মিতানি রাজ্য ধ্বংসের পরে যদি এসে থাকে তবে প্রচলিত আফগান কিংবদন্তী যে আফগানরা ইহুদীদের অন্যতম পথভ্রষ্ট উপজাতি সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা নয়। অর্থাৎ কিংবদন্তী দেশ ঠিক রেখেছে কিন্তু পাত্র নিয়ে গোলমাল করে ফেলেছে।
- অধ্যায় চোদ্দ, পৃ. ৬০, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- বুদ্ধের শরণ নিয়ে কাবুলী যখন মগধবাসী হয়নি তখন ইসলাম গ্রহণ করে সে আরবও হয়ে যায়নি।
- অধ্যায় চোদ্দ, পৃ. ৬৩, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় পনেরো
[সম্পাদনা]- হঠাৎ মনে পড়ল দার্শনিক দ্বিজেন্দ্র নাথকে কুইনিন খেতে অনুরোধ করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘কুইনিন জ্বর সারাবে বটে, কিন্তু কুইনিন সারাবে কে? কুইনিন সরাবে কে?’ তিনি কুইনিন খাননি। কিন্তু আমি মুসলমান – হিন্দু যা করে, তার উল্টো করতে হয়।
- অধ্যায় পনেরো, পৃ. ৬৬, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- বসকে খুশী করবার জন্য যার ঘটে ফন্দি-ফিকিরের অভাব, তার পক্ষে কোম্পানির কাগজ হচ্ছে তর্ক না করা।
- অধ্যায় পনেরো, পৃ. ৬৭, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় ষোলো
[সম্পাদনা]- শো’ কেসে রবারের দস্তানা দেখে এক আইরিশম্যান আরেক আইরিশম্যানকে জিজ্ঞেস করেছিল, জিনিসটা কোন্ কাজে লাগে। দ্বিতীয় আইরিশম্যানও সেই রকম, বলল, ‘জানিসনে, এ দস্তানা পরে হাত ধোয়ার ভারি সুবিধে। হাত জলে ভেজে না, অথচ হাত ধোওয়া হল।’
- অধ্যায় ষোলো, পৃ. ৭০, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- কুঁড়ে লোকের যদি কখনো শখ হয় যে সে ভ্রমণ করবে অথচ ভ্রমণ করার ঝুঁকি নিতে সে নারাজ হয় তবে তার পক্ষে সবচেয়ে প্রশস্ত পন্থা কাবুলের সংকীর্ণ উপত্যকায়। কারণ কাবুলে দেখবার মত কোনো বালাই নেই।
- অধ্যায় ষোলো, পৃ. ৭০, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- যে আস্তাবলে সিকন্দর শাহের ঘোড়া বাঁধা ছিল, সেখানে এখন হয়ত বেগুন ফলছে। পণ্ডিতরা কম্পাস নিয়ে তার নিশানা লাগাতে পারলে আনন্দে বিহ্বল। কোথায় এক টুকরো পাথর বুদ্ধের কোঁকাড়া চুলের আড়াই গাছা ঘষে ক্ষয়ে প্রায় হাতের তেলের মত পালিশ হয়ে গিয়েছে; তাই পেয়ে পণ্ডিত পঞ্চমুখ – পাড়া অতিষ্ঠ করে তোলেন।
- অধ্যায় ষোলো, পৃ. ৭০, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- তিন টুকরো পাথর, বাগান থেকেই কুড়ানো শুকনো ডাল-পাতা আর দু'চারটে হাড়িবাসন দিয়ে উত্তম রান্না করার কায়দায় ভারতীয় আর কাবুলী রাঁধুনীতে কোনো তফাত নেই।
- অধ্যায় ষোলো, পৃ. ৭৩, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- সমস্ত দিন দেখেছি অজানা ফুল, অজানা গাছ, আধাচেনা মানুষ, আর অচেনার চেয়েও পীড়াদায়ক অপ্রিয়দর্শন শুল্ক কঠিন পর্বত। হঠাৎ চেনা সপ্তর্ষি দেখে সমস্ত দেহমন জুড়ে দেশের চেনা ঘর-বাড়ির জন্য কি এক আকুল আগ্রহের আঁকুবাঁকু ছড়িয়ে পড়ল। স্বপ্নে দেখলুম, মা এষার নামাজ পড়ে উত্তরের দাওয়ায় বসে সপ্তর্ষির দিকে তাকিয়ে আছেন।
- অধ্যায় ষোলো, পৃ. ৭৪, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় সতেরো
[সম্পাদনা]- ভারতবর্ষের সধবারা তাজা মাছ না খেয়ে শুঁটকি মাছের কাঁটা দাঁতে লাগিয়ে একাদশীর দিনে সিঁথির সিঁদুর অক্ষয় রাখেন।
- অধ্যায় সতেরো, পৃ. ৭৫, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় আঠারো
[সম্পাদনা]- তওবা! তওবা! স্ত্রীলোকের জন্য কখনো জব্বর লড়াই হয়? মোক্ষম লড়াই হয় রাইফেলের জন্য। রাইফেল থাকলে সুন্দরীর স্বামীকে খুন করে তার বিধবাকে বিয়ে করা যায়। উত্তম বন্দোবস্ত। সে বেহেস্তে গিয়ে হুরী পেল তুমিও সুন্দরী পেলে। [আফগান দোস্ত মুহম্মদের বয়ানে]
- অধ্যায় আঠারো, পৃ. ৮১, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় উনিশ
[সম্পাদনা]- আফগান বিয়ের ভোজে যে বিস্তর লোক প্রচুর পরিমাণে খাবে সেকথা কাবুলে না এসেও বলা যায়, কিন্তু তারো চেয়ে বড় তত্ত্বকথা এই যে, যত খাবে তার চেয়ে বেশী ফেলবে, বাঙলা দেশের এই সুসভ্য বর্বরতার সন্ধান আফগানরা এখনো পায়নি।
- অধ্যায় উনিশ, পৃ. ৮৫, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় বিশ
[সম্পাদনা]- কাঠের ডাণ্ডা লাগানো টিনের কেনেস্তারায় করে রাধু মালীর নাইবার জল আনার মধ্যে আর নন্দলাল কর্তৃক চিত্রবিচিত্রিত মৃৎপাত্র ভরে ষোড়শী তন্বঙ্গী সুন্দরীর জল আনার মধ্যে যে সুপারফ্লুয়িটির তফাত তাই আর্ট।
- অধ্যায় বিশ, পৃ. ৯০, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় একুশ
[সম্পাদনা]- পৃথিবীর সব জাত বিশ্বাস করে যে, তার মত ভুবনবরেণ্য জাত আর দুটো নেই। গরীব জাতের তার উপর আরেকটা বিশ্বাস যে, তার দেশের মাটি খুঁড়লে সোনা রুপো তেল বেরবে তার জোরে সে বাকী দুনিয়া, ইস্তেক চন্দ্রসূর্য কিনে ফেলতে পারবে।
- অধ্যায় একুশ, পৃ. ৯৪, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- সত্যযুগে মহাপুরুষরা ভবিষ্যদ্বাণী করতেন, কলিযুগে গণৎকাররা করে।
- অধ্যায় একুশ, পৃ. ৯৪, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় বাইশ
[সম্পাদনা]- হেঁটে বেড়ানো কাবুলীরা পছন্দ করে না। প্রথম বিদেশী ডাক্তার যখন এক কাবুলী রোগীকে হজমের জন্য বেড়াবার উপদেশ দিয়েছিলেন তখন কাবুলী নাকি প্রশ্ন করেছিল যে, পায়ের পেশীকে হায়রান করে পেটের অন্ন হজম হবে কি করে?
- অধ্যায় বাইশ, পৃ. ৯৫, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় তেইশ
[সম্পাদনা]- বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটবুক কি-বলে না-বলে সেটা অবান্তর, জীবনে কাজে লাগে বাজারের গাইড-বুক।
- অধ্যায় তেইশ, পৃ. ৯৯, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় পঁচিশ
[সম্পাদনা]- ভাষা এক হলেই তো আর ভাবের বাজারের বেচাকেনা সহজ সরল হয়ে ওঠে না। শুনেছি, পুরানো বোতলও নাকি নয়া মদ সইতে পারে না।
- অধ্যায় পঁচিশ, পৃ. ১০৮, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় ছাব্বিশ
[সম্পাদনা]- কাবুল উপত্যকার চাষারা দেখলুম বাঙালী চাখার মতই নিরীহ – মারামারির চেয়ে গালাগালিই বেশী পছন্দ করে তার কারণ বোধ হয় এই যে, কাবুল উপত্যকা বাংলা দেশের জমির চেয়েও উর্বরা।
- অধ্যায় ছাব্বিশ, পৃ. ১০৯, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- আমাদের চাষার গামছা আর কাবুলী চাষার পাগড়ি দুই-ই একবস্তু। হেন কর্ম নেই যা গামছা আর পাগড়ি দিয়ে করা যায় না-ইস্তেক মাছ ধরা পর্যন্ত।
- অধ্যায় ছাব্বিশ, পৃ. ১০৯, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- ডিমোক্রেসি বড় ঠুনকো জিনিস; কখন যে কার অভিসম্পাতে ফেটে চৌচির হয়ে যায়, কেউ বলতে পারে না। তারপর আর কিছুতেই জোড়া লাগে না।
- অধ্যায় ছাব্বিশ, পৃ ১১০, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় সাতাশ
[সম্পাদনা]- দেমিদফ বললেন, ‘সামোভারটি তুলা শহরে তৈরী।’ আমার মাথার ভিতর দিয়ে যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল। বললুম, কোথায় যেন চেখফ না গর্কির লেখাতে একটা রাশান প্রবাদ পড়েছি, ‘তুলাতে সামোভার নিয়ে যাওয়ার মত।’ 'আমরা বাঙলাতে বলি, ‘তেলা মাথায় তেল ঢালা’। ‘কেরিইং কোল টু নিউ কাসুল’, ‘বরেলি মে বাঁস লে জানা’ ইত্যাদি সব ক'টাই আলোচিত হল। আমার ফরাসী প্রবাদটিও মনে পড়েছিল, ‘প্যারিসে আপন স্ত্রী নিয়ে যাওয়া’ কিন্তু অবস্থা বিবেচনা করে [লেখকের বন্ধুভাজন দেমিদফের স্ত্রী ফরাসী হওয়ায়] সেটা চেপে রাখলুম। হাফিজও যখন বলেছেন, ‘আমি কাজী নই মোল্লাও নই, আমি কোন্ দুঃখে ‘তওবা’ (অনুতাপ) করতে যাব, আমি ভাবলুম, ‘আমি ফরাসী নই, আমার কি দায় রসাল প্রবাদটা দাখিল করবার।’
- অধ্যায় সাতাশ, পৃ. ১১২, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় আঠাশ
[সম্পাদনা]- একটি আট ন’ বছরের মেয়েকে তারই সামনে আমরা একদিন কয়েকজন মিলে অনেকক্ষণ ধরে তার সৌন্দর্যের প্রশংসা করেছিলুম-সে চুপ করে শুনে যাচ্ছিল। যখন সক্কলের বলা কওয়া শেষ তখন সে শুধু আস্তে আস্তে বলেছিল, ‘তবু তো আজ তেল মাখিনি।’
- অধ্যায় আঠাশ, পৃ. ১১৫, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় ত্রিশ
[সম্পাদনা]- বিদেশে সম্মান-প্রাপ্ত নৃপতির সম্মান স্বদেশে লাঘব হয়। [আফগান মীর আসলমের বয়ানে]
- অধ্যায় ত্রিশ, পৃ. ১২০, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় একত্রিশ
[সম্পাদনা]- ছয় ঋতুতে ছয় রকম করে প্রিয়ার বিরহযন্ত্রণা ভোগ না করা পর্যন্ত মানুষ নাকি পরিপূর্ণ বিচ্ছেদবেদনার স্বরূপ চিনতে পারে না…।
- অধ্যায় একত্রিশ, পৃ ১২৪, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় বত্রিশ
[সম্পাদনা]- খাঁটি ইসলামে গুরু ধরার রেওয়াজ নেই। পণ্ডিতেরা বলেন, ‘কুরান শরীফ কিতাবুম্মুবীন’ অর্থাৎ ‘খোলা কিতাব’; তাতেই জীবনযাত্রার প্রণালী আর পর-লোকের জন্য পুণ্য সঞ্চয়ের পন্থা সোজা ভাষায় বলে দেওয়া হয়েছে; গুরু মেনে নিয়ে তার অন্ধানুসরণ করার কোনো প্রয়োজন নেই। অন্য দল বলেন, ‘একথা আরবদের জন্য খাটতে পারে, কারণ তারা আরবীতে কুরান পড়তে পারে। কিন্তু ইরানী, কাবুলীরা আরবী জানে না; গুরু না নিলে কি উপায়?’
- অধ্যায় বত্রিশ, পৃ. ১২৭-১২৮, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- গুরু দ্বিবিধ; যে গুরুগৃহে প্রবেশ করার দিন তোমার মনে হইবে, গুরু ভিন্ন পদমাত্র অগ্রসর হইতে পারো না এবং ত্যাগ করার দিন মনে হইবে, গুরুতে তোমার প্রয়োজন নাই, তিনিই যথার্থ গুরু – গুরুর আদর্শ তিনি যেন একদিন শিষ্যের জন্য সম্পূর্ণ নিষ্প্রয়োজন হইতে পারেন। দ্বিতীয় শ্রেণীর গুরু শিষ্যকে প্রতিদিন পরাধীন হইতে পরাধীনতর করেন। অবশেষে গুরু বিনা সে-শিষ্য নিঃশ্বাসপ্রশ্বাসকর্ম পর্যন্ত সুসম্পন্ন করিতে পারে না। [আফগান মীর আসলমের বয়ানে]
- অধ্যায় বত্রিশ, পৃ. ১২৮, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- মানুষের স্বভাব আপন ব্যক্তিগত সুখদুঃখকে বড় করে দেখা – হাতের সামনের আপন হাতের মুঠি হিমালয় পাহাড়কে ঢেকে রাখে।
- অধ্যায় বত্রিশ, পৃ. ১৩০, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- ইহলোকে বক্ষলগ্ন থাকবে রাইফেল, পরলোকে হুরী, এই পুরুষ-প্রকৃতির উপর আফগান-দর্শন সংস্থাপিত।
- অধ্যায় বত্রিশ, পৃ. ১৩৫, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- বউকে বেঁধে রাখতে হয় মনের শিকল দিয়ে, হৃদয়ের জিঞ্জির দিয়ে।
- অধ্যায় বত্রিশ, পৃ. ১৩৫, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় তেত্রিশ
[সম্পাদনা]- ইতিহাসে দেখেছি, বর্ষা নামার সঙ্গে সঙ্গে বাঙলা দেশের বিদ্রোহবিপ্লবও ছেঁড়া কাঁথা গায়ে টেনে নিয়ে ‘নিদ্রা যায় মনের হরিষে’।
- অধ্যায় তেত্রিশ, পৃ. ১৩৭, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় ছত্রিশ
[সম্পাদনা]- কনফুৎসিয়াস বলেছেন, ‘বাঘ হতে ভয়ঙ্কর কু-রাজার দেশ’, আমি মনে মনে বললুম, ‘তারও বাড়া যবে ডাকু পরে রাজবেশ।’
- অধ্যায় ছত্রিশ, পৃ. ১৪৫, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় সাঁইত্রিশ
[সম্পাদনা]- বামুনের জাত গেলে প্রায়শ্চিত আছে, আর মুসলমানদের তো জাত যায় না। কিন্তু ইংরেজের জাতিভেদ বড় ভয়ঙ্কর জিনিস। তার দেশে যেরকম কাগজে কলমে লেখা, আইনে বাঁধা কন্সটিটুশন নেই ঠিক তেমনি তার জাতিভেদপ্রথা কোনো বাইবেল-প্রেয়ারবুকে আপ্তবাক্য হিসেবে লিপিবন্ধ করা হয়নি।
- অধ্যায় সাঁইত্রিশ, পৃ. ১৪৯, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় চল্লিশ
[সম্পাদনা]- সরু চালের ভাত আর ইলিশ মাছ ভাজার চেয়ে উপাদেয় খাদ্য আর কিছুই হতে পারে না। মূর্খ বলে কিনা বিরয়ানি-কুর্মা তার চেয়ে অনেক ভালো। … যে নরাধম ইলিশ মাছের অপমান করে তার মুখদর্শন করা মহাপাপ…।
- অধ্যায় চল্লিশ, পৃ. ১৬৪, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় একচল্লিশ
[সম্পাদনা]- সহৃদয়তা, করুণা মৈত্রীর সন্ধান যখন এক মানুষ অন্য মানুষের ভিতর পায় তখন তাঁকে কখনো মহাপুরুষ কখনো ‘অবতার’ কখনো ‘দেবতা’ বলে ডাকে এবং তাঁর পাদপীঠকে জড় জেনেও পুণ্যতীর্থ নাম দিয়ে অজরামর করে ভুলতে চায়। এবং সে-বিচারের সময় মানুষ উপকারের মাত্রা দিয়ে কে ‘মহাপুরুষ’ কে ‘দেবতা’ সে কথা যাচাই করে না, তার স্পর্শকাতর হৃদয় তখন কৃতজ্ঞতার বন্যায় সব তর্ক সব যুক্তি সব পরিপ্রেক্ষিত, সব পরিমাণজ্ঞান ভাসিয়ে দেয়।
- অধ্যায় একচল্লিশ, পৃ. ১৬৮-১৬৯, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- ভাবপ্রবণ বাঙালী একবার অনুভূতিগত বিষয়বস্তুর সন্ধান পেলে মূল বক্তব্য বেবাক ভুলে যায়।
- অধ্যায় একচল্লিশ, পৃ. ১৬৯, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
অধ্যায় বিয়াল্লিশ
[সম্পাদনা]- কোনো তর্ক নেই, যুক্তি নেই, ন্যায় অন্যায় নেই, মেয়েদের কর্ম হচ্ছে পুরুষের আকাট মূর্খতার জন্য চোখের জল ফেলে খেসারতি দেওয়া। কিন্তু আশ্চর্য, এ-বেদনাটা প্রকাশও করে আসছে পুরুষই কবিরূপে। শুনেছি পাঁচ হাজার বৎসরের পুরোনো ববিলনের প্রস্তরগাত্রে কবিতা পাওয়া গিয়েছে কবি মা-জননীদের চোখের জলের উল্লেখ করে যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।
- অধ্যায় বিয়াল্লিশ, পৃ. ১৮৫, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- চাকরীতে উন্নতি করে মানুষ হয় বুদ্ধির জোরে নয় ভগবানের কৃপায়। বুদ্ধিমানকে ভগবানও যদি সাহায্য করেন তবে বোকাদের আর পৃথিবীতে বাঁচতে হত না।
- অধ্যায় বিয়াল্লিশ, পৃ. ১৮৬, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- ভয় ছিল যে, দু’শ মাইলের মোটর ঝাঁকনি খেয়ে কবি যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন আর তাঁর কাব্যসৃষ্টিতে বাধা পড়ে তবে তাতে করে ক্ষতি হবে সমস্ত পৃথিবীর। কাবুল কবিকে দেখতে চায়, কিন্তু এমন দুর্ঘটনার নিমিত্তের ভাগী হতে যাবে কেন? আমি সাহস দিয়ে বলতুম, ‘কবি ছ’ফুট তিন ইঞ্চি উঁচু তাঁর দেহ সুগঠিত এবং হাড়ও মজবুত।’
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রসঙ্গে, অধ্যায় বিয়াল্লিশ, পৃ. ১৮৭, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- বহুদিন ধরে সাবান ছিল না বলে আবদুর রহমানের পাগড়ি ময়লা। কিন্তু আমার মনে হল চতুদিক্রে বরফের চেয়ে শুভ্রতর আবদুর রহমানের পাগড়ি, আর শুভ্রতম আবদুর রহমানের হৃদয়। [প্রবাসে লেখকের ভৃত্য আফগান আবদুর রহমান সম্পর্কে]
- অধ্যায় বিয়াল্লিশ, পৃ. ১৮৯, ৫ম মুদ্রণ (১৯৯৭), স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
দেশে বিদেশে সম্পর্কে উক্তি
[সম্পাদনা]উৎসর্গ প্রসঙ্গে লেখক
[সম্পাদনা]- আমি তখন অর্থাৎ ১৮৪৮ [১৯৪৭] খ্রিস্টাব্দে আমার এক অন্ধ্রদেশীয় বন্ধু বীরভদ্র রাওয়ের সঙ্গে মাদ্রাজের বেলাভূমিতে নির্মিত তস্য গৃহে কালযাপন করছি। সেখানে সমুদ্রের ওপারে চমৎকার সূর্যোদয় হয়। সূর্যাস্ত অবশ্য সমুদ্রগর্ভে হয় না। অর্থাৎ পূর্বাকাশে যে রঙে রঙে রঙিন চিত্রলেখা অঙ্কিত হয়, সেটি কারো দৃষ্টি এড়াতে পারে না। আমি মাঝে মাঝে তারই বর্ণনা আপন ডায়েরিতে লিখি। বীরভদ্র রাওকে মাঝে মাঝে পড়ে শোনাই। হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই সে একখান অত্যুত্তম … খাতা তথা ভারী সুন্দর একটা কলম এনে দিয়ে বলল, সূর্যোদয় সূর্যাস্তের স্কেচ অর্থাৎ বর্ণনা তো এঁকেছ বিস্তর, এবার একটা পূর্ণাঙ্গ কেতাব লেখো। তখন মনে পড়ল, আমাদের পরিবারের প্রথম সন্তান, আমার বড় দাদার বড় মেয়ে জাহানারা একাধিকবার ব্যঙ্গ করে আমায় বলেছে, "হেঁ! ছোট চাচার শুধু মুখে মুখে হাইজাম্প আর লংজাম্প। আপনি একটা বই লিখে দেখান না, আপনি কিছু একটা করতে পারেন?" আমার তখন বড্ডই গোশশা হতো। তদুপরি অর্থ কৃচ্ছ্রতা। তখন গত্যন্তর না পেয়ে লিখলুম, ‘দেশে বিদেশে’। সেইটি নিয়ে চললুম সুদূর মাদ্রাজ থেকে সিলেটে। বইখানা জাহানারাকে নিজেই পড়ে শোনাব বলে। ওই মেয়েটিকে আমি বড়ই ভালোবাসতাম। গিয়ে দেখি, জাহানারা সিলেটে নেই। তার স্বামী কক্সবাজারে বদলি হয়েছে বলে দুই ছেলে আর এক পাতানো ভাইসহ চাটগাঁ থেকে জাহাজ ধরেছে। দুই দিন পর খবর এলো, জাহাজডুবিতে সবাই গেছে। এই শোক আমার কলিজায় দগদগে ঘা হয়ে আছে। বইখানা তাই জান্নাতবাসিনী জাহানারার স্মরণে উৎসর্গিত হয়েছে। … সাহিত্যের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে তার সঙ্গে আমার আলাপ-আলোচনা হতো। তার সঙ্গে তর্ক করে আমি কখনোই জিততে পারিনি। আমি সারা দুনিয়ায় দেশি-বিদেশি অনেক বুদ্ধিমতী মহিলা দেখেছি। কিন্তু তোমাকে আমি হলফ করে বলতে পারি, জাহানারার মতো বুদ্ধিমতী মহিলা আমি জীবনে দুটি দেখিনি। ওর যদি অল্প বয়সে বিয়ে না হতো এবং তার যদি ওই রকম অকালমৃত্যু না হতো; তাহলে সে জীবনে অনেক কিছুই করতে পারত। আমার ভাইবোনদের মধ্যে কেউ কেউ বললেন, সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও শুধু দুর্ভাগ্যের কারণে জাহানারা কোনো কীর্তি রেখে যেতে পারল না। সবাই হয়তো এক দিন তাকে ভুলে যাবে। কাজেই ‘দেশে বিদেশে’ জাহানারাকে উৎসর্গ করলে এর পাঠক-পাঠিকারা অন্তত জাহানারাকে মনে রাখবে। কথাটা আমার মনে খুব লাগল। ‘দেশে বিদেশে’ জাহানারাকে উৎসর্গ করতে আমি সম্মতি দিলাম। কিন্তু মোটের ওপর ইট ওয়াজ আ ফ্যামিলি ডিসিশন। তবে আমার বলতে কোনো দ্বিধা কিংবা সংকোচ নেই যে, ‘দেশে বিদেশে’ লেখার পেছনে জাহানারা আমাকে খুব প্রেরণা জুগিয়েছিল। কাজেই জাহানারা বেঁচে থাকলে বইটা লিখেই আমি দেশে ছুটে গিয়ে তাকে বলতাম, ‘এই দেখ আমি একটা বই লিখেছি। এবার দেখি তুই কী বলিস?’ কিন্তু জাহানারার অকালমৃত্যু আমাকে সে সুযোগ দিল না। জীবিতাবস্থায় আমি সব সময় তার কাছে হারতাম, মরেও সে আমাকে হারিয়ে দিয়ে গেল। এবং আমার বিশ্বাস, ছোট চাচার বই ছাপা হতে দেখলে সে খুবই খুশি হতো।
- দেশে বিদেশে গ্রন্থের উৎসর্গ প্রসঙ্গে সৈয়দ মুজতবা আলী [১]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় দেশে বিদেশে সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।