বিষয়বস্তুতে চলুন

পেঁচা

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
বাড়ির শরীরে ক্ষয় ধরলে পেঁচা আসে। ইমারতের দেহে বটবৃক্ষ জাগলে পেঁচা সেখানে বাসস্থান খোঁজে। লালবাড়ির গায়ে শ্যাওলার সবুজ স্তর জমলে পেঁচা উঁকি দেয় চিলেকোঠায়। আঁধার রাতে অশরীরী আত্মার পিছু নেয় পেঁচা, সহাবস্থানের ইচ্ছেয়। পার্ক স্ট্রীটের কত ফিরিঙ্গি বাড়িতেই ঘর বেঁধেছিল রাতের এই কারিগর।
রামকুমার মুখোপাধ্যায়

পেঁচা, প্যাঁচা বা পেচক এক ধরনের নিশাচর শিকারী পাখি। এই পাখিটির প্রায় ২০০টি প্রজাতি রয়েছে। পেঁচা উপর থেকে ছোঁ মেরে শিকার ধরতে অভ্যস্ত। শিকার করা ও শিকার ধরে রাখতে এরা বাঁকানো ঠোঁট বা চঞ্চু এবং নখ ব্যবহার করে। কুমেরু, গ্রীনল্যান্ড এবং কিছু নিঃসঙ্গ দ্বীপ ছাড়া পৃথিবীর সব স্থানেই পেঁচা দেখা যায়। এরা গাছের কোটর, পাহাড়, পাথরের গর্ত বা পুরনো দালানে থাকতে ভালবাসে। পেঁচার জীবাষ্ম গবেষণা করে গবেষকরা অনুমান করেন আজ থেকে প্রায় ছয় কোটি বছর আগে পেঁচার জন্ম হয়েছে। পেঁচার অদ্ভুত রকমের ডাক এবং নিশাচর স্বভাব একে নানা কুসংস্কার এবং অলৌকিক চিন্তার জন্ম দিয়েছে। প্রচলিত বিশ্বাসবোধে পেঁচাকে মন্দ ভাগ্য, শারীরিক অসুস্থতা অথবা মৃত্যুর প্রতিচ্ছবি হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই এই বিশ্বাস এখনও অনেক মানুষের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে।

উক্তি

[সম্পাদনা]
  • সেই ঘুটঘুটে অন্ধকারে হুতুম পেঁচার চোখ টপটপ করে জ্বলছে, আর কিছু দেখাও যাচ্ছে না, শোনাও যাচ্ছে না, অথচ অনেক পাখিই আজ সেখানে জুটেছে ঘোঁট করতে। পেঁচার সর্দার হুতুম একে একে নাম ধরে ডাকতে লাগলেন, আর চারি দিকে একটার পর একটা লাল, নীল, হলদে, সবুজ চোখ জ্বালিয়ে দেখা দিতে থাকল একে একে ধুঁধুল পেঁচা, কাল্ পেঁচা, কুটুরে পেঁচা, গুড়গুড়ে পেঁচা, দেউলে পেঁচা, দালানে পেঁচা, গেছো পেঁচা, জংলা পেঁচা, পাহাড়ী পেঁচা। হুথুমথুমে ডেকে চলেছে, “ভূতো পেঁচা, খুদে পেঁচা, চিলে পেঁচা, গো-পেঁচা, গোয়ালে পেঁচা, লক্ষ্মী পেঁচা,” লক্ষ্মী পেঁচার দেখা নেই, চোখও জ্বলছে না।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আলোর ফুলকি, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩৮৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪
  • প্যাঁচা কয় প্যাঁচানি,
    খাসা তোর চ্যাঁচানি!
    শুনে শুনে আন্‌মন
    নাচে মোর প্রাণমন!
  • তবু রোজ রাতে আমি চেয়ে দেখি, আহা,
    থুরথুরে অন্ধ পেঁচা অশ্বত্থের ডালে ব’সে এসে
    চোখ পাল্টায়ে কয়: ‘বুড়ি চাঁদ গেছে বুঝি বেনোজলে ভেসে?
    চমৎকার!
    ধরা যাক্ দু-একটা ইঁদুর এবার—’
    • জীবনানন্দ দাশ, জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা, প্রকাশক- নাভানা, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৭
  • বাড়ির শরীরে ক্ষয় ধরলে পেঁচা আসে। ইমারতের দেহে বটবৃক্ষ জাগলে পেঁচা সেখানে বাসস্থান খোঁজে। লালবাড়ির গায়ে শ্যাওলার সবুজ স্তর জমলে পেঁচা উঁকি দেয় চিলেকোঠায়। আঁধার রাতে অশরীরী আত্মার পিছু নেয় পেঁচা, সহাবস্থানের ইচ্ছেয়। পার্ক স্ট্রীটের কত ফিরিঙ্গি বাড়িতেই ঘর বেঁধেছিল রাতের এই কারিগর।

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]